মামুন হাসান রুবেল, ফ্রান্স :
অত্যন্ত উৎসবমুখর ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে 'সলিডারিটি আজি ফ্রান্স' আয়োজিত "বাণিজ্য মেলা বা ঈদ বাজার ২০২৩"অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্যারিসের প্রানকেন্দ্র রিপালিক চত্বরে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের বড় আকারের অনুষ্ঠান আয়োজন করা 'সলিডারিটি আজির' পক্ষে ছিল একটি চ্যালেঞ্জিং অভিজ্ঞতা। তারপরেও অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে সলিডারিটি আজির ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এন কে নয়ন এবং সাফ এর স্বেচ্ছাসেবক এবং সদস্যগণ অত্যন্ত আনন্দিত ও উৎফুল্ল বোধ করেন।অনুষ্ঠানের শুরুতে সাফ এর প্রেসিডেন্ট এন কে নয়ন এবং বাঙালি কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন।
নারীরা যে চার দেয়ালের মাঝে সীমাবদ্ধ না থেকে আবহ বাংলার প্রচলিত শৃঙ্খল ভেঙে নিজের পরিবার এবং সমাজে অবদান রাখতে পারে এই মেলায় তার একটি বাস্তব উদাহরণ আমরা দেখতে পেরেছি।সর্বোপরি এ মেলাকে ঘিরে প্রবাসের মাটিতে বাংলাদেশের একটা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল এবং আগত দর্শনার্থীরা তাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মেলা সম্পর্কে।এবং অবশ্যই যার আইডিয়া ছাড়া এই মেলাটা সম্পূর্ণ করা সম্ভব ছিল না তিনি হচ্ছেন সাফের সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবক “মিস সোনিয়া”।
অনুষ্ঠানের শুরুতে 'সলিডারিটি আজি ফ্রান্স'এর প্রেসিডেন্ট অনুষ্ঠানে অংশনকারী প্রতিটি স্টলে ঘুরে সবার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া এবারের এই মেলায় বাংলাদেশী ২৫ টা প্রতিষ্ঠানসহ বিদেশী তিনটা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল।
এই প্রথমবার ফ্রান্সেই বাণিজ্য মেলা হয় যেখানে সবাই বিনামূল্যে স্টল দিতে পেরেছিল এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শকদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল এবং বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছিল যা মেলার সবচেয়ে মজার এবং আকর্ষণীয় বিষয় ছিল এবং তা নিঃসন্দেহে মেলায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল । এবারের এই মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের পোশাক ও শিল্প সংস্কৃতি বিদেশীদের কাছে পরিচয় করে দেওয়া এবং এ আয়োজনটা বিদেশিদের কাছে ছিল দৃষ্টিনন্দনীয় ও প্রশংসনীয় । এই বাণিজ্য মেলা বা ঈদ বাজারের মূল লক্ষনীয় বিষয় ছিল যে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি স্টলের কর্ণধার ছিলেন নারী উদ্যোক্তা।
তারা বলেন যে প্রবাসে বসবাস করার কারণে কর্মব্যস্ততার মধ্যে থেকে কখন ঈদ আসে এবং ঈদ যায় তা কখনো উপলব্ধি করতে পারেন না। এ মেলায় আসার ফলে ঈদের আগ মুহূর্তে একটা ঈদের আমেজ অনুভব করতে পেরে তার জন্য তারা 'সলিডারিটি আজি ফ্রান্সকে' কৃতজ্ঞতার সহিত ধন্যবাদ জানান।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে ফ্রান্সের সংস্কৃতির এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিনিময়ের অভিনব চর্চা এ মেলায় আমরা দেখতে পেরেছি। এ মেলায় উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স পার্লামেন্টের এমপি ড্যানিয়েল ওবোনো প্যারিস ১৮ এর কাউন্সিলর আনজুমানে সিসোক।
মেলায় আগত দর্শনার্থী তিশা বলেন যে, মনে হয় না প্রবাসের মাটিতে দাঁড়িয়ে আছি। মনে হচ্ছে এক টুকরো বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আছি "আনন্দ রে আনন্দ, কোথায় থাকিস তুই বল”উচ্ছসিত কন্ঠে বললেন তিনি।
ডলি তালুকদার বলেন যে, আমি চার মাস হয়েছে ফ্রান্সে এসেছি এবং এত বাঙালি দেখে মনে হচ্ছে আমি মিনি বাংলাদেশে আছি।
দর্শনার্থী শারমিন বলেন যে,আমি দশ বছর ধরে ফ্রান্সে আছি, এ ধরণের মেলায় প্রথমবারের মতো আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে এবং বলেন যে এ ধরনের মেলা যেন ঘন ঘন আয়োজন করা হয়।
পরিশেষে, এই মেলাটা সফল করার জন্য সলিডারিটি আজি ফ্রান্স এর সদস্যরা এবং স্বেচ্ছা সেবকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে।সাফের প্রেসিডেন্ট ধন্যবাদ জানান সাফের সকল সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক বৃন্দকে।যাদের মধ্যে রয়েছেন সোনিয়া, সোহেল, রোমান, কাজী, মিজান, তৌহিদ, মনি, আফসানা, শাম্মি, মামুন, ইমন, শম্পা, সবুজ, সহ আরো অনেকে।এবং সর্বশেষ ফরাসিরা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে আমাদের আয়োজন জানার চেষ্টা করেছ এবং তাদের পক্ষ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন ।
Tags
প্রবাস