সঞ্জয় সাহা, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সোনালেরপাড় গ্রামের আকলিমা বেগম গুপ্তধনের প্রলোভনে গোবিন্দগঞ্জের জ্বিনের বাদশা চক্রের সক্রিয় সদস্য প্রতারক সাদ্দাম আলী (২৯) এর ক্ষপ্পরে পড়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ ১লক্ষ ৮০ হাজার টাকা খুইয়েছেন।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সকালে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস কনফারেন্স করেছে পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। তিনি জ্বীনের বাদশা নামক এসব প্রতারক থেকে সকলকে সচেতন থাকার আহবান জানান।
প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার জানান- গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৪নং ছাপড়হাটি ইউনিয়ন এর দক্ষিন মরুয়াদহ সোনালেরপাড় গ্রামের বানিজ মিয়ার স্ত্রী মোছা: আকলিমা বেগম একজন গৃহীনি। গত ৮ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ থেকে বিভিন্ন সময়ে জ্বিনের বাদশা চক্রের সক্রিয় সদস্য সাদ্দাম আলী আকলিমাকে গভীর রাতে কলদিয়ে বগুড়ার মহাস্থানগড় পবিত্র শাহ সুলতান মাজার এর ঠিকানা পরিচয় উল্লেখ করে ভাগ্যবতী মা সহ বিভিন্ন সুমিষ্ট কথা সহ গুপ্তধনের প্রলোভন দিয়ে বলে গুপ্তধন যোগানো একটি পাঠাকে রক্ত দিয়ে সন্তুষ্ট করার কথা বলে বিকাশে গত ১৪ই এপ্রিল ২৩ইং তারিখ ৯হাজার ৯শ ৮০ টাকা নেয়। গুপ্তধনের হাড়িতে সাপ আছে, মক্কা হতে দুধ এনে খাইয়ে দিলে গুপ্তধন পাওয়া যাবে এমন আশ্বাস দিয়ে দুধ ও কাসার বাটির জন্য বিকাশে ৪০ হাজার টাকা এবং ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন ধর্মীয় কথা বলে বিশ্বাস অর্জন করে পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে বিভিন্ন নম্বর হতে দফায় দফায় ১লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়াও গত ১৫ই এপ্রিল ২৩ ইং তারিখ বিকালে ১লক্ষ ৯০হাজার টাকা মূল্যের দুই ভরি স্বর্ণ বাবদ ১টি চেন, দুই জোড়া হাতের বালা সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মজুমদার হাট স্কুলে ৩জন অজ্ঞাতনামা আসামী সিমেন্ট ও পিতলের তৈরি সোনালী রংয়ের একটি পুতুল আকলিমাকে দিয়ে তার কাছ থেকে ওসব নিয়ে যায় এবং তার মনে বিশ্বাস জন্মায় কাউকে না জানিয়ে পুতুলটি শয়ন ঘরে খাটের নিচে পুতে রেখে মাটির নিচ থেকে তুললে ৮১ টুকরা স্বর্ণ হবে। এরই অভিযোগে প্রেক্ষিতে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের গতিবিধির উপর নজরদারীর মাধ্যমে অবস্থান নির্ণয় ও ধারাবাহিকভাবে পুলিশী অভিযান চালিয়ে ১১ই এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখ গভীর রাতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন অন্তর্গত গোবিন্দপুর নলডাঙ্গার চর হতে একই উপজেলার বগুলাগাড়ীর মুক্তার হোসেন পুত্র সাদ্দাম আলী (২৯) কে আত্নসাতকৃত স্বর্ণালংকার এর মধ্যে দুটি বালা ও স্বর্ণালংকার বিক্রির নগদ ১২হাজার টাকা, প্রতারণাকৃত সিম নম্বর এর মোবাইল ফোন সহ ৫টি মোবাইল, সিমকার্ড জব্দ করে তাকে গ্রেফতার করে এবং সিমেন্ট ও পিতলের পুতুল ( স্বর্ণ সাদৃশ্য) ভুক্তভোগীর শয়ন ঘরের খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় জ্বিনের বাদশা নামক প্রতারক এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। যা- সুন্দরগঞ্জ থানার ১০ মে ২০২৩ তারিখ এর এফআইআর নম্বর - ১৮, জিআর নম্বর- ১৩৮. পেনাল কোড ১৮৬০ ধারায় ৪০৬/৪২০/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ রুজু হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন - গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও অর্থ ইবনে মিজান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বি সার্কেল আবু লায়েচ মো: ইলিয়াস জিকু, নবাগত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বি সার্কেল আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উদয় কুমার সাহা, সহকারী পুলিশ সুপার শুভ দেব, সুন্দরগঞ্জ অফিসার ইনচার্জ এ,কে,এম আজামরুজ্জামান সহ অনেকে।
উল্লেখ্য, উক্ত সাদ্দাম আলী সংঘবদ্ধ জ্বীনের বাদশা নামধারী প্রতারক সক্রিয় সদস্য। সে তাদের সহযোগী অপর জ্বীনের বাদশা নামধারী প্রতারকদের সহায়তায় নিরীহ সাধারণ গৃহবধূদের টার্গেট করে ধর্মভিরুতার সুযোগ গ্রহনপূর্বক আল্লাহ রাসুলের দোহাই তথা জ্বীনের নামে সিন্নী, কোরআন শরীফ, জায়নামাজ ক্রয় বাবদ টাকা গ্রহন করে এবং মনে বিশ্বাস সৃষ্টি করে অঢেল সম্পদ দেয়ার নামে প্রতারণার মাধ্যমে সর্বোস্ব কেড়ে নিয়ে সর্বশান্ত করে।
Tags
বাংলাদেশ