রশিদুল আলম রশিদ, নওগাঁ থেকে :
নওগাঁ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা বন্ধে চেম্বারের লিখিত আবেদনে সারা দেয়নি জেলা প্রশাসন। এনিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা তৈরী হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের ডিএসবি প্রতিবেদন ছাড়াই মেলার আয়োজনে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নওগাঁ শহরের প্রাণকেন্দ্র মুক্তির মোড়ে তৃনমূল নারী উদ্যোক্তা সেসাইটি -গ্রাসরুট জোড়েসোরে মেলার আয়োজন করছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষনা করা না হলেও শোনা যাচ্ছে মেলার উদ্বোধন ২৫ মে। জিলা স্কুলের সামনে মাইক্রোষ্ট্যান্ড সড়িয়ে বিশাল এলাকা জুড়ে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলেছে আয়োজকরা। ভেতরে ও বাইরে ডেকোরেশন, ষ্টল নির্মান করা হচ্ছে। এছাড়া বড় পরিসরে শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র ও হোটেল-রেস্তোরা বসানোর কাজ চলছে। জেলা স্কুলের প্রধান ফটক ঘেঁষে ফুটপাত জুড়ে বসছে খাবারের দোকান।
নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডষ্ট্রির সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল জানান, নওগাঁ শহরের মুক্তি মোড়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই অনুমতি পেয়ে গ্রাসরুট মেলার আয়োজন করছে। অথচ চেম্বার ও জেলা পুলিশকে কিছুই জানানো হয়নি। এমনকি মেলা আয়োজনের জন্য সাম্প্রতিক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পর্যন্ত নেয়া হয়নি।
চেম্বার সভাপতি আরো জানান, নিয়ম অনুসারে মেলা আয়োজন করতে গেলে অন্তত এক মাস পূর্বে আয়োজককে স্থানীয় চেম্বার অব-কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির মাধ্যমে অনুমতি গ্রহন করতে হয়। মেলার স্থান বরাদ্দসহ নির্ধারিত ফি জমা দেয়ার চালান প্রমানসহ দাখিল করতে হবে। কিন্তু গ্রাসরুট চেম্বারের সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করেনি। মেলার জন্য নির্ধারিত ফি জমা দেননি এবং কোন প্রকার সুপারিশ পত্র গ্রহণ করেনি। যা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিপত্রের সঙ্গে সমন্বয়হীন। তাই দ্রুত এই মেলার আয়োজন বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ২৩ মে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এখনও কোন উদ্যোগ গ্রহন করেননি। ফলে শহরের বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা আয়োজিত মেলা বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন স্থানে লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনকারীরা জানান, এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে বিদ্যালয়গুলোতে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হবে। এসময় মেলা চলানো হলে শিক্ষার্থীদের পড়া লেখায় দারুন ভাবে বিঘ্নিত হবে। তারা আরো বলেন, শোনা যাচ্ছে মেলার প্রবেশ টিকিট মূল্য ২০ টাকা। ওই টিকিটে লটারী বা জুয়া চালানো হবে। এতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়ার শংকা রয়েছে। এছাড়া পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই এতো বড় মেলার আয়োজন পুরোটাই নিরাপত্তাহীন বলে মন্তব্য করেছেন তারা। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মেলা বন্ধ করা না হলে আন্দোলন কর্মসূচীর প্রস্ততি নেয়ার কথা জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান তৃনমূল নারী উদ্যোক্তা সেসাইটি -গ্রাসরুট এর স্থানীয় প্রতিনিধি মর্জিনা লাকি বলেন- জেলা প্রশাসন মেলা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে। বন্ধের কোন নির্দেশনা দেয়নি।
এ বিষয়ে নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক জানান, শহরের মুক্তি মোড়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা আয়োজনের বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় মেলা বন্ধের জন্য স্থানীয়দের পাঠানো একটি লিখিত আবেদন পাওয়া গেছে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কিম্বা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা মুখ খুলছেন না। যোগাযোগ করা হলে তাঁরা সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন।
রশিদুল আলম রশিদ