নিজস্ব প্রতিবেদক :
যমুনা টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার, হামলাকারিদের দ্রæত গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা।
শনিবার সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট চত্বরে) ওই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালিত হয়েছে।
দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার হাবিব সরোয়ার আজাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসুচী পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি মিলন আহমদ, ডিবিসির সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি আসাদ মণি, মাই টিভি ও আমার সংবাদ জেলা প্রতিনিধি আবু হানিফ, দৈনিক আমার বার্তা জেলা প্রতিনিধি মোঃ আফজাল হোসেন, দৈনিক ভোরের সময় জেলা প্রতিনিধি আপ্তাব উদ্দিন, গেøাবাল টিভির প্রতিনিধি এনামুল হক মুন্না প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, যমুনা টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের উপর গত বৃহস্পতিবার হামলার ঘটনায় জড়িত সকলকে দ্রত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হামলার সাথে জড়িতদের ও হামলার পেছনের মদদ দাতাদের শনাক্ত করে দ্রæত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যেন আগামীতে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের কারণে সারাবিশ্বে রেংকিংএ অনেক আগেই পিছিয়ে গেছে।
মানববন্ধন ও সমবেশে উপস্থিত ছিলেন- মোহনা টিভি ও জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি কুলেন্দু শেখর দাস, দৈনিক আজকালের খবর জেলা প্রতিনিধি আমিনুল হক, দৈনিক ডেসটিনি জেলা প্রতিনিধি বিপলু রজ্ঞন দাস, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন জেলা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন লিটন, গেøাবাল টিভির জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান রুমান, দৈনিক সারাবাংলা সংবাদ জেলা প্রতিনিধি শাওন রায়, নিউ টাইমস্২৪ স্টাফ রিপোর্টার রহিম রানা, বর্তমান সময়.কম স্টাফ রিপোর্টার আক্তার হোসেন, দৈনিক যুগান্তরের দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি সানোয়ার হোসেন সুনু, ছাতক প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন রনি, দিরাই প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান লিটন, জামালগঞ্জ প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান, ধর্মপাশা প্রতিনিধি এনামুল হক সহ স্থানীয়,আঞ্চলিক, জাতীয় দৈনিক, অনলাইন মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকগণ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার লালপুর এলাকায় নির্মিতব্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজে অনিয়ম বিষয়ে সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের করা রিপোর্টে তদন্ত দল সেখানে যায়। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে সাংবাদিক আমিনুল ইসলামকে তদন্তে সহায়তা করতে অনুরোধ জানালে তিনি সকাল ১০টায় লালপুরে প্রকল্প এলাকায় যান। তদন্ত দলের উপস্থিতিতেই সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি খায়রুল হুদা চপল সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের রিপোর্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও তাকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এ সময় আমিনুল প্রতিবাদ করলে চপল তাকে শহরছাড়া করবেন বলে সবার সামনেই হুমকি দেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করে তদন্ত কমিটি। এ সময় চপল তার নিজ বলয়ের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের খবর দিলে তদন্ত দলের উপস্থিতিতেই সেখানে মেটরসাইকেলযোগে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর কান্তি দেসহ যুবলীগের কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমিনুল ইসলামকে হেনস্তা করার চেষ্টা করতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে তদন্ত দল প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করতে থাকে। এ সময় আমিনুলকে নিজের গাড়িতে করে পৌঁছে দেবেন বলে গাড়িতে উঠতে বলেন চপল। তদন্ত দলের প্রধান নিজেও আমিনুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চপলকে অনুরোধ জানান।
এদিকে প্রকল্প এলাকা থেকেই চপলের গাড়ির সামনে ও পেছনে শহরের দিকে মোটরসাইকেলে আসতে থাকেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শহরের মল্লিকপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে চপল গাড়ি থামিয়ে আমিনুল ইসলামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা যুবকরা সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান সজিবের নেতৃত্বে আমিনুলকে ঘেরাও করে তার উপর হামলা চালানো হয়। এতে মাথায় ও বুকে আঘাত পান তিনি।
Tags
বাংলাদেশ