রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি :
নানিয়ারচরে বিদ্যুৎ বিভাগের বাড়তি বিলের অভিযোগ কমবেশি সব সময়ই ছিল। নানিয়ারচরের বুড়িঘাট এলাকা ও আশপাশের এলাকায় কয়েক মাস ধরে ভূতুড়ে বিল নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে নানিয়ারচর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের গ্রাহকদের মাঝে।যে কোন মাসের বিলে কোনো অসংগতি থাকলে পরের মাসের বিলে তা সমন্বয় করা হবে। বলা হলেও বাস্তবে সেটি করা হয়নি বলেই গ্রাহকদের কাছ থেকে বহু অভিযোগ আসছে।
মিটার রিডার ফরিদুল ইসলাম দাবি করেছেন, সে কোনো ভূতুড়ে বা বাড়তি বিল করেনি। কিন্তু নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট,হাতিমারা,পুলিপাড়ার বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মিটার রিডার ফরিদের যুক্তি ধোপে টেকে না। বুধবার দুপুরে মহালছড়ি বিদ্যুৎ অফিসের লাইনম্যান মো: মামুন জানান, মিটার রিডিং নিয়মিত করার নিয়ম থাকলেও লোক সল্পতার কারনে ঠিক মত হয়নি,আমরা যথাযথ একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি,এদিকে মিটার রিডার ফরিদুল ইসলাম জানান, কতৃপক্ষের নির্দেশ ক্রমে টার্গেট অনুযায়ী মিটার রিডিং করা হচ্ছে,প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে মিটারে যতটুকু ইউনিট আসবে তারবেশি বিল কতটুকু যৌক্তিকতা? মিটার রিডার ফরিদ বলেন- আশেপাশে অনেক মিটারে চোরাই লাইন ব্যবহার হয় যা, ঘাটতি থাকে সে সকল ইউনিট সকল কাষ্টমারের উপর ন্যাস্ত করে মিলিয়ে আমাকে করে দিতে হয়,তার এমন হাস্যকর জবাবে কাষ্টমারের জন্য সুফল আসবে বলে মনে করে
ছেন না,এভাবে কাষ্টমারের পকেট কেটে টাকা নেওয়া জুলুমের চেয়ে বেশি।এমন চলতে থাকলে মিটার নেওয়ার কি যৌক্তিকতা তার কোন সদউত্তর দিতে পারেনি মিটার রিডার ফরিদুল ইসলাম। ফরিদের প্রশ্নের উত্তরে লাইনম্যান মামুন মুঠোফোনে জানান, টার্গেট বা এমন কোন কিছু বিদ্যুৎ বিভাগে নেই। মিটারে যতটুকু ইউনিট আসবে তার চেয়ে বেশি ইউনিট বিল করা অপরাধ বলে মনে করছি,তাছাড়া মিটার রিডার ফরিদকে দুই মাসের জন্য সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।বাকিটা কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।
এই বিষয়ে প্রতিবেদক মহালছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধানের মুঠোফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।যা বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে বুড়িঘাটের ব্যবসায়ী আবু হানিফ,ফারুকসহ একাধিক গ্রাহক তাদের ভূতুরে বিল নিয়ে এ প্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেন। । নানিয়ারচর মিটার রিডার মাখন চন্দ্র বলছেন, প্রকৃত বিল থেকে যাদের বেশি বিল এসেছে তা সমন্বয় করে নেওয়া হবে। গ্রাহককে উদ্বিগ্ন না হতে অনুরোধ জানাচ্ছি।
তবে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলছেন, মিটার রিডাররা কখনোই বাসায় গিয়ে বিল করেন না। ফলে সমন্বয় কীভাবে করা হবে সেটা স্পষ্ট না। বিদ্যুৎ অফিসের মিটার রিডার ফরিদের ব্যবহার নিয়েও মনির হোসেন নামের এক গ্রাহক কথা তুলেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাহকের সঙ্গে তারা দুর্ব্যবহার করে থাকেন। নানিয়ারচরের বুড়িঘাট ১নং টিলার বাসিন্দা রুস্তম আলী জানান,আমি মিটার রিডার ফরিদ কে অনেক অনুরোধ করেও কোন সুরহা পাচ্ছি না।আমি নানিয়ারচর উপজেলা প্রশাসন ইউএনও মহোদয় অথবা স্থানীয় সেনা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। প্রতি মাসে তারা মনগড়া বিল করে গ্রাহকদের হয়রানি করছেন। ভূতুড়ে বিলের পর বিল করে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা চাই আমরা।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব হাওলাদার জানান,বুড়িঘাট এলাকায় নতুন লাইন সংযোগ হলেও এক বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে,তবে এই এলাকায় বিভিন্ন গ্রাহকদের মাঝে থেকে ভূতুড়ে বিলের অভিযোগ এসেছে।আমি প্রথমে কর্ণপাত করিনি,যার অনেক সত্যতা পাওয়া গেছে,উপজেলার প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে আমরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এধরণের বিল কাষ্টমারের জন্য শুভজনক নয়।আমাদের সরকার মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বদমাম ছড়াতে কিছু কুচক্রী মহল লিপ্ত,এটা এর বাইরে ছাড়া কিছু না। এমন মিটার রিডার ব্যক্তিকে অপসরন করতে মহালছড়ি বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করছি।
নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, এভাবে ভূতুড়ে বিল করার ক্ষমতা বিতরণ সংস্থা বা কোন ব্যক্তির নেই। সরকারি নিয়মে মিটার দেখা ছাড়া বিল করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
Tags
বাংলাদেশ