মোঃ হানিফ মিয়া, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) থেকে :
পটুয়াখালীর উপকূলে নিষিদ্ধ মশারি জাল দিয়ে অবাধে শিকার করা হচ্ছে গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেনু। আর রেনু পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। অন্যদিকে চিংড়ির সঙ্গে নানা জাতের মাছের পোনা ও সমুদ্রিক প্রাণীর লার্ভা মারা যাচ্ছে। একে হুমকির মুখে পড়েছে সাগর উপকূলের জীববৈচিত্র। মাছের বংশবিস্তার ধ্বংস হওয়ারও শঙ্কা করা হচ্ছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখাযায়, গলদা ও বাগদা চিংড়ির রেনু ধরতে সাগরের ঢেউ আর নদীর স্রোতের বিপরীতে মশারি জালের মই টানা হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর জাল টেনে নিয়ে আসা হয় কিনারে। এরপর জাল থেকে বিভিন্ন মাছের পোনা রাখা হয় একটি পাত্রে। সেখান থেকে জেলে পরিবারের নারী সদস্যরা পানিভর্তি অপর একটি পাত্রে চিংড়ির রেনু বাছাই করে রাখছেন। আর বাকি মাছের পোনা ও লার্ভা দিচ্ছেন মাটিতে। এতে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা ও সামুদ্রিক প্রাণীর লার্ভা। যার কারণে মাছের বংশবিস্তার ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পরেছে।
তবে জেলেদের দাবি, পেটের দায়ে তারা চিংড়ির রেনু শিকার করেন।
এদিকে অবৈধতার দোহাই দিয়ে জেলেদের কাছ থেকে কম দামে চিংড়ির রেনু কিনে নিয়ে চোরাই পথে পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় বিভিন্ন সময় আটকও হয়েছে তারা।
রাঙ্গাবালী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আনোয়ারুল হক বাবুল জানান, অবৈধ পন্থায় যাতে কেউ চিংড়ির রেনু ধরতে না পারে সে জন্য তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী।
মৎস্য ইন্সটিটিউটের জরিপ সূত্রে জানা গেছে, পোনা সংগ্রহকারীরা চিংড়ির পোনা ধরতে গিয়ে ৩৮টি ভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি, ছয় প্রজাতির অন্য মাছ এবং ১০০ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর লার্ভা ধ্বংস করছে। যার কারণে মশারি জাল দিয়ে রেনু শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার। তবে মশারি জাল নিষিদ্ধ হলেও তা দিয়ে এভাবে প্রকাশ্যেই চলছে চিংড়ির রেনু শিকার। আগুনমুখা, তেতুলীয়া ও রামনাবাদ নদী সহ কুয়াকাটার সাগর কিনারে প্রতিনিয়ত চলে চিংড়ির রেনু শিকার।
Tags
বাংলাদেশ