জয়পুরহাট প্রতিনিধি: নিয়োগ বানিজ্যের জেরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুয়াত পুর মাদ্রাসার সুপার (প্রধান শিক্ষক) ও তার সহযোগীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতরা হলেন মাদ্রাসা সুপারেনটেনডেন্ট আ ন ম আব্দুল মান্নান (৫৪) ও একই উপজেলার জয়হার গ্রামের শামসুদ্দিনের ছেলে শাহজাহান আলী (৪৩)।
এ ঘটনায় মাদ্রাসা সুপার আ ন ম আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে রোববার রাতে পাঁচবিবি থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ ও মামলার সূত্র ধরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুয়াত পুর গ্রামে অবস্থিত জিন্নাতিয়া দাখিল মাদ্রসা প্রতিষ্ঠিত হয় উনিশ শতকের ষাটের দশকে। আর ১৯৯২ সালের দিকে সুপার পদে আ ন ম আব্দুল মান্নান ওই মাদ্রসায় যোগদান করেন।
মাদ্রসায় যোগদানের কিছু দিনের পর থেকে পরিচালনা কমিটি ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা মারাত্মক ভাবে ভেঙ্গে পরে। এরমধ্যে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক কর্মচারী সব মিলিয়ে ১০/১২ জনের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় সুপারেনটেনডেন্ট আ ন ম আব্দুল মান্নান কুয়াতপুর গ্রামের এনামুলের স্ত্রী সাকিয়া বেগমকে আয়া পদে নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালে ৫ লাখ টাকা গ্রহন করেন। এরপর তাকে নিয়োগ না দিয়ে তার চেয়ে বেশী টাকা নিয়ে একই পদে অন্য এক নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন সাকিয়া ও তার স্বামী এনামুল।
শাকিয়ার স্বামী এনামুল, একই মাদ্রসার সহকারী সুপার, আব্দুল মান্নান (২য়), এবতেদায়ী শাখা প্রধান শিক্ষক আশরাফ আলীসহ নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক কয়েক জন শিক্ষক কর্মচারী অভিযোগে আরো জানান, ‘ ২০১৯ সালে আয়া পদে শাকিয়াকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে সুপার শাকিয়ার স্বামী এনামুলের কাছ থেকে টাকাগুলো গ্রহন করেন। আর দীর্ঘ ২ বছর পর তার চেয়ে বেশী ঘুষ নিয়ে আরেক নারীকে ওই পদে নিয়োগ দেন তিনি। এরপর ২/৪ হাজার টাকা করে ধীরে ধীরে ৪ লাখ টাকা শোধ করলেও অবশিষ্ট এক লাখ টাকা দিব দিচ্ছি করে কাল ক্ষেপন করতে থাকেন।
এসব কারনে গত ১৩ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে সুপার শাকিয়ার বাড়ির পাশ দিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে সুপারের সাথে দেখা হলে পাওনা টাকা নিয়ে শাকিয়ার সাথে সুপারের কথা কাটাকাটির শুরু হয়। এক পর্যায়ে সুপার ও তার সহযোগী শাকিয়াকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলে উত্তেজিত এলাকাবাসী সুপারকে বেদম প্রহার করেন। পরে এলাকাবাসীরা তাকে উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন। এরপর তিনি সুস্থ হয়ে এনামূল ও তার স্ত্রী শাকিয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় কুসুম্বা ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদ মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ পেয়েছি। এসব কারনে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরেছে। সমস্যার সমাধানে সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি ।’
পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল হক জানান, ‘ মামলা হয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Tags
বাংলাদেশ