Daily News BD Online

মহাদেবপুরে দূর্যোগের শংকা নিয়ে ঝড়ে নুয়ে পড়া কাঁচা ধান কাটছেন চাষিরা


আব্দুল ওয়াদুদ, মহাদেবপুর (নওগাঁ) :

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার আধাপাকা ধানগাছ ঝড়ে নুয়ে পড়েছে। সেসব ধান ঘরে তোলা নিয়ে দারুন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা। তার উপর নিচু এলাকার জমিতে বৃষ্টির পানি জমা হয়েছে। পানিতে ভিজে থাকা ধান অল্পদিনের মধ্যে কাটতে না পারলে পচে বিনষ্ট হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে এলাকায় দেখা দিতে পারে ফলন বিপর্যয়। সরেজমিনে এসব তথ্য পাওয়া গেলেও উপজেলা কৃষি অফিসে এসংক্রান্ত কোন তথ্য নেই। কর্তৃপক্ষ বলছেন ঝড়বৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
উপজেলা সদর থেকে মাতাজীহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার পাকা সড়ক দিয়ে গেলে দুধারে মাঠের পর মাঠ খেতের ধানগাছ নুয়ে পড়া দেখা যায়। নিচু জমিতে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এলাকার প্রান্তিক চাষিরা এখন ব্যস্ত এসব নুয়ে পড়া জমির আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে। উপজেলার অন্যান্য এলাকারও একই অবস্থা।
এই সড়কের পাশে মগলিশপুর মাঠে নুয়ে পড়া ধান কাটছিলেন ওইগ্রামের মৃত বণিজ উদ্দিনের ছেলে ইয়াছিন আলী। তিনি জানালেন, তিনি এই মাঠে আড়াই বিঘা জমিতে গোল্ডেন জাতের চিকন ধানের চাষ করেছিলেন। গত শনিবার বিকেলে কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিতে তার ১০ কাঠা জমির ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি জমা হয়ে গাছগুলো ডুবে গেছে। পুরোপুরি পাকেনি ধান। আরো কমপক্ষে এক সপ্তাহ পর কাটার উপযুক্ত হতো। আগামী এক সপ্তাহ এক নাগারে কড়া রোদ হলে পানি শুকিয়ে যেত। কিন্তু আকাশে মেঘ দেখলেই বুক দুরু দুরু করা শুরু করে। আবার বৃষ্টি হলে খেতেই পচে যাবে তার ধান। তাই শংকার মধ্যেই কাঁচা ধানই কেটে তুলছেন তিনি। তাকে সহযোগীতা করতে মাঠে আসা তার স্ত্রী জানালেন, কাঁচা ধান কাটায় ফলন অনেক কম হবে। কিন্তু কোন উপায় নেই।
এই চাষির ধান কাটার ছবি তুলতে দেখে আশেপাশের কয়েকজন চাষি ভীড় জমালেন। তারা শুনালেন তাদের বিপর্যয়ের কথা। অলংকারপুর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে চাষি আনোয়ার হোসেন জানালেন, ১২ বিঘা জমিতে গোল্ডেন জাতের ধান লাগিয়েছিলেন তিনি। এরমধ্যে ৪ বিঘা জমির ধান নুয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই নুয়ে পড়া দেড় বিঘা জমির কাঁচা ধান তিনি কেটেছেন। বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ২৫ মণ। কিন্তু ধান পুরোপুরি পাকলে ৩০ থেকে ৩২ মণ ফলন হতো। তিনি অভিযোগ করে বললেন, এত জমির ধানগাছ নুয়ে পড়ে থাকলেও কৃষি বিভাগের কেউ তাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেননি, বা তাদেরকে কোন পরামর্শও দেননি।
ঝড়বৃষ্টিতে ধানের কোন ক্ষতি হতে পারে তা মানতে নারাজ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোমরেজ আলী। জানতে চাইলে এসংক্রান্ত কোন তথ্যই তিনি দিতে পারেননি। কত হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাও তিনি সংগ্রহ করেননি। তিনি জানান, ঝড়বৃষ্টিতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন