Daily News BD Online

সাতক্ষীরায় সাংবাদিক বিবস্ত্র কারী নাশকতা মামলার আসামী কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি


খান নাজমুল হুসাইন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
সাতক্ষীরায় সাংবাদিক বিবস্ত্র কারী ও ৫ টি নাশকতা মামলার আসামী কাদেরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গত ২৬ এপ্রিল রাতে সাতক্ষীরা শহরের বৈশাখী হোটেলে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে দৈনিক সাতনদী পত্রিকার কালিগঞ্জ প্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ৬০ বছরের হাফিজুর রহমানকে বিবস্ত্র করে তাকে পেটানো ও তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যের কারিগর বিষ্ণুপুর ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের। জানা গেছে, তিনি পাঁচটি নাশকতা মামলার আসামী। সাংবাদিক হাফিজের আপত্তিকর ছবি ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া আব্দুল কাদের ও তার আলোচিত সহযোগী ক্যাডারদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সাতক্ষীরায় কর্মরত ২৯ জন সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের ১৪জন নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে রবিবার এক আবেদন করেছেন। ঐ আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয় যে, তারা প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মুকুন্দ মধুসূধনপুর গ্রামের এলাহী বক্স গাজীর ছেলে আব্দুল কাদের একজন জামায়াতের সক্রিয় কর্মী। ২০১৩ সালে একই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবু তালেব সরদার, শ্রীধরকাটি গ্রামের যুবলীগ নেতা শেখ ছিদ্দিকুর রহমানসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের মামলার এজাহার ও চার্জশীটভুক্ত আসামী। তার ভয়ে এলাকার অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পায় না।বিগত ইউপি নির্বাচনে জয়লাভ করে সে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের আগষ্ট মাসে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের খলিশাবুনিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের তালাকপ্রাপ্ত মেয়ে এক সন্তানের জননী শারমিন আক্তার রিমাকে বিয়ে করে আব্দুল কাদের। এরপর  অন্য নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে, সে সংক্রান্ত ভিডিও পেয়ে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর কাদেরকে শহরের ৮ নং ওয়ার্ডের বিবাহ রেজিষ্টারের মাধ্যমে তালাকনামা পাঠায় রিমি। তালাকনামা পেয়ে কাদের রিমির উপর শাররিক ও মানসিক নির্যাতন করে।  বিষয়টি রিমির চাচা জাতীয় পার্টির নেতা সাংবাদিক আব্দুল হাকিম  সাংবাদিক হাফিজুর রহমানকে জানান । সেই অনুযায়ি খোঁজখবর নিয়ে কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য সংগ্রহ করেন ওই সাংবাদিক হাফিজুর। এক পর্যায়ে আব্দুল কাদের তার তালাক দেওয়া স্ত্রী শারমিন আক্তারের একটি অনৈতিক সম্পর্কের তথ্য দেয় সাংবাদিক হাফিজকে। শারমিন ও কাদের উভয়ের অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও চিত্র সাংবাদিকের হাতে এসে যাওয়ায় তারা বিপদ বুঝতে পেরে ভেদাভেদ ভুলে হাফিজকে বিপাকে ফেলার কৌশল নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় টাকার বিনিময়ে শারমিন আক্তার ওই ভিডিও চিত্র নেওয়ার কথা বলে সাংবাদিক হাফিজকে ২৬ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে হোটেল বৈশাখীতে আসতে বলে ।পরিকল্পনা মাফিক কাদের ও তার দলবল সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকে। হোটেলে ঢোকার সাথে সাথে মোবাইলে ভিডিও এর অপশান খোলা রেখে হাফিজকে জোরপূর্বক জামা প্যান্ট খুলতে বাধ্য করে শারমিন ও কাদেরসহ তাদের ভাড়াটিয়া বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে নির্যাতনের মুখে হাফিজ তার পোশাক খুলতে বাধ্য হয়। তখন তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ভিডিও ফুটেজ কোথায় বল এমন কথা বলতে বলতে রক্তাক্ত জখম করে কাদের। প্রতিবাদের একপর্যায়ে শারমিন জুতো দিয়ে পেটায় হাফিজকে। টানা ৪১ মিনিট বিবস্ত্র অবস্থায় হাফিজকে মারপিটের চিত্র ধারণ করে তা বিভিন্ন সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় কাদের । একপর্যায়ে পুলিশ হাফিজ ও শানরমিনকে থানায় নিয়ে যেয়ে আব্দুল কাদেরের দায়েরকৃত ২০১২ সালের পর্ণগ্রাফি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন আদালতে  চালান দেয় ।সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাড. আব্দুস সামাদ, অ্যাড. জিয়াউর রহমানসহ কয়েকজন সাংবাদিকদের বলেন, আব্দুল কাদের মামলায় শারমিন আক্তার রিমিকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করলেও আসামীর কলামে তাকে খলিষাবুনিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের মেয়ে হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ ছাড়া অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য শারমিন ও হাফিজুর রহমান হোটেল বৈশাখীতে এলে তাদের বিরুদ্ধে ২৯০ ধারায় মামলা হওয়ার কথা। অথচ অনৈতিক সম্পর্কের বাস্তবতা না পাওয়ায় পুলিশ ২৯০ ধারায় মামলা না নিয়ে শারমিনকে নিজের স্ত্রীর দাবিদার দেখানো আব্দুল কাদেরের দায়েরকৃত পর্ণগ্রাফি মামলার আসামী করেছে হাফিজকে। তবে কাদেরের মোবাইল ফোনে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী শারমিনের আপত্তিকর ছবি থাকা ও তা ব্লাকমেইল করতে সাংবাদিক হাফিজকে সরবরাহ করার কারণে তার বিরুদ্ধে পুলিশ কেন পণ্যগ্রাফি আইনে মামলা নিলো না ? এ ছাড়া হোটেলে বিবস্ত্র করে হাফিজের উপর নির্যাতন ও তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে আব্দুল কাদের, শারমিন আক্তার, আরিফ হোসেন, আব্দুস সালামদের বিরুদ্ধে কেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ও পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা হবে না? জামায়াত নেতা আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরিতে তার আপত্তিকর ভিডিও চিত্র সাংবাদিকের ডকুমেন্ট সংগৃহীত থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এ বিষয় সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান এর সাথে মুঠো ফোনে আলাপের চেষ্টাকালে আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন