চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
শনিবার (১৩ মে) বেলা ১১টায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের ওয়ালটন মোড়স্থ নাহালা ভবনে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের সাবেক সদস্য খাইরুল আলম জেমকে প্রকাশ্যে হত্যাকান্ডের ঘটনা কোন রাজনৈতিক কোন্দলে হয়নি। শিবগঞ্জ উপজেলার মর্দনা এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি দেবত্তর সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়। যারাই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকুক না কেন, আমরা এর বিচার চাই। অথচ বিষয়টিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা দলীয় কোন্দল হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এর সাথে দলের কোন কোন্দল বা সম্পর্ক নেই।
এসময় এমপি আব্দুল ওদুদ আরও বলেন, জেলায় আ.লীগের কোন দলীয় কোন্দল নেই। দলীয় কোন্দল বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করার কাজটিও একটি ষড়যন্ত্র। আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতেই এসব মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দলের মধ্যে কোন বিভেদ নেই। তবে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ কর্মকর্তার ইন্ধনে বিভেদের চেষ্টা করছে কুচক্রী মহল।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি পত্রিকায় জেম হত্যাকে নিয়ে নানারকম মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে। নিহত যুবলীগ নেতার পরিবারের দায়ের করা মামলাকে প্রভাবিত করতেই নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে হত্যার সাথে জড়িত মদদদাতারা। এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে আমরা জানি, দেশের একজন শীর্ষ মাদক গডফাদার সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ রানা টিপু। একজন সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে রয়েছে তার অবৈধ সম্পর্ক৷ সেই সাংবাদিক সবসময়ই মাদক সম্রাট টিপুর পক্ষে সত্যকে মিথ্যা ও মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার করে। এমনকি জেম হত্যার পরেও হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী টিপুকে বাঁচাতে নানারকম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
এমপি আব্দুল ওদুদ বলেন, চলতি মেয়াদের আগে আরও দুই মেয়াদে ১০ বছর আমি এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এই ১০ বছরে বিরোধীদের নামে মিথ্যা মামলা, চাঁদাবাজি, হত্যা, হামলার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সাংবাদিক ভাইয়েরা অনুসন্ধান করে দেখেন, কোন থানার ওসি বলতে পারবে না, আমি কারো জন্য অন্যায় কোন তদবির করেছি। কোন সরকারি অফিসে প্রভাব রাখিনি। কোন চাপ প্রয়োগ করে অবৈধ সুবিধা আদায় করিনি। কোন ব্যক্তি যদি ভূমি দখলের বিষয়ে প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমি দল থেকে পদত্যাগ করব। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের সাথে দেবত্তর সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের আগে হত্যার শিকার খাইরুল আলম জেমের নামে কোন মামলা ছিল না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ আরও বলেন, যুবলীগ নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর জেম হত্যার পর তার পরিবার থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলার সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। দলের একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে আমি তার বিচার চাই। সে যদি সন্ত্রাসীও হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অধিকার কারো নেই। এই হত্যাকান্ডে পুলিশ বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়ে কাজ করেছে। এছাড়াও আ.লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সাবেক কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম হত্যা হওয়ার কয়েক দিন আগে প্রকাশ্যপ তার জীবননাশের শঙ্কার বিষয়টি ফেসবুক লাইভে এসে বলেছেন। এমনকি ডিআইডি সৈয়দ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লাইভ করার কয়েকদিনের মধ্যেই তাকে হত্যা করা হয়। জেমকে হত্যার আগে আমার নামসহ ১০ জনের তালিকা করা হয়, যাদেরকে হত্যা করা হবে।
তালিকার প্রথমে থাকা জেমকে হত্যা করা হয়েছে। বাকিদেরকেও যেকোন সময় হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে শুনতে পাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে আ.লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Tags
বাংলাদেশ