স্টাফ রিপোর্টার :
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের ম্যানেজারের অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানসিক নির্যাতনের কারনে মোহাম্মদুল্লাহ নামের এক কর্মকর্তা স্ট্রোক করে হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকাল আনুমানিক ১১:০০ ঘটিকায় ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ইউছুপুরখিল এলাকায় কর্মরত অবস্থায় স্ট্রোক করেন মোহাম্মদ উল্লাহ।
জানা গেছে জনাব মোহাম্মদ উল্লাহ ঈদগাঁও উপজেলার গ্রামীণ ব্যাংক ঈদগাঁও কক্সবাজার শাখায় সেকেন্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় স্টোক করেন। তিনি বর্তমানে কক্সবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ-ই বিষয়ে জনাব মোহাম্মদ উল্লাহ এ-র স্ত্রী মিফতাহুল জান্নাত নিপা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের অফিসিয়াল কাজের সুবাধে প্রতিদিনের মত টাকা তুলতে ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ইউছুপুরখিল কেন্দ্রে যান মোহাম্মদুল্লাহ। সেখানে কর্মরত অবস্থায় পূর্বের কোন নোটিশ ও অভিযোগ ছাড়াই জোনাল ম্যানেজার মোহাম্মদুল্লাহকে ফোন দিয়ে ঠাকুরগাঁও জোনে বদলী করা হয়েছে বলে জানান। এবং কোন কালক্ষেপণ না করে একদিনের মধ্যে রিলিজ নিয়ে সেখানে চলে যেতে বলেন। এমন খবর পাওয়ার সাথে সাথে মোহাম্মদুল্লাহ স্ট্রোক করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
মোহাম্মদুল্লাহ’র স্ত্রীর দাবি, জোনাল ম্যানেজার খান মোহাম্মদ মোস্তফা কবির ও এরিয়া ম্যানেজার রোমান জামান পাটোয়ারী যোগদানের পর ঈদগাঁও শাখার সকল কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত কাজের চাপ প্রয়োগ এবং মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। তাদের অতিরিক্ত চাপে অনেক কর্মকর্তা বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। আবার অনেকে চাকরী ছেড়ে দিয়ে অবসরে চলে গেছেন।
তাদের দাবী, কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজের চাপ প্রয়োগ ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মোহাম্মদুল্লাহ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
এ বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহণ ও প্রশাসনের সহযোগী কামনা করেন মোহাম্মদুল্লাহর পরিবার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজারের কাজের বাইরে অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে অনেকেই চাকরী ছেড়েছেন বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামীন ব্যাংকের অপর এক কর্মকর্তা'র দাবি, জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজার যোগদানের পর থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে নানান অজুহাতে মানসিক নির্যাতন চালান। নিজেদের মনপুত না হলে খারাপ ভাষায় গালিগালাজও করেন। তাদের এমন আচরণে চাকরি ছেড়েছেন অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। আবার অনেকেই বদলী হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। জোনাল ম্যানেজার ও এরিয়া ম্যানেজারকে মানসিক রোগী বলেও দাবী করেন এই কর্মকর্তা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামীণ ব্যাংক কক্সবাজার এরিয়া ম্যানেজার রোমান জামান পাটোয়ারী বলেন, হঠাৎ বদলীর কারনে হয়তো মোহাম্মদুল্লাহ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি নিজেও তাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের ওপরে দায় দেয়া ঠিক না।আমাকেও তো অফিস সিলেট থেকে বদলী করে কক্সবাজারে পাঠিয়েছে।
অতিরিক্ত কাজের চাপ ও মানষিক টর্চারের কারনে অনেকে চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংকে সবসময় কাজের চাপ থাকে, এটি যারা সহ্য করতে পারেনি তারাই চাকরি ছেড়ে চলেগেছে। আমাকেও তো হেড অফিস সবসময় কাজের চাপের মধ্যে রাখে। আমি তো পেশার সহ্য করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার গ্রামীণ ব্যাংকের জোনাল ম্যানেজার খান মোহাম্মদ মোস্তফা কবির বলেন, আমাদের কিছু নির্দেশনা রয়েছে তাই এ বিষয়ে মিডিয়ায় কথা বলা যাবে না।
Tags
বাংলাদেশ