Daily News BD Online

যুগ যুগ ধরে ফুলবাড়ীর কাঁসা পুকুরে হচ্ছে পীরের মেলা


আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে কাঁসা পুকুরে পীরের মেলার আসর বসে। স্থানীয়ভাবে এই মেলা কাঁসা পুকুরের মেলা হিসেবে পরিচিত। শত শত বছর থেকে চলে আসছে এই আসর। বৈশাখ মাসের প্রতি রবিবার এই মেলার আসর বসে। সব বয়সি মানুষ এই মেলার অপেক্ষায় থাকে। কাঁসা পুকুরের এই মেলায় দেশ ও দেশের বাহির থেকে মনবাসনা পূরণ করার আশায় অনেক লোকজন আসে।

কথিত আছে যে,খজ-খিবির নামক এক পীরের বাসা ছিল ওই স্থানে। বর্তমানে যা তলিয়ে গেছে এবং পুকুরে পরিণত হয়েছে। মানুষজন এখনো মনে করেন যে পীর ওই বাসায় এখনো রয়েছে। তাই মানুষজন তার (পীরের) মাধ্যমে তাদের মনোবাসনা পূরণ করার আশায় সিন্নি (খিচুরি,পায়েশ) রান্না করে নিয়ে আসেন। মেলা কর্তৃপক্ষের একজন বলেন এটি বংশীয়ভাবে একজনের পর একজনের উপর দায়িত্ব পড়ে এই মেলা পরিচালনার। যা অলৌকিকভাবে স্বপ্নের মাধ্যমে পীর বলে দেন।তিনি আরো বলেন এই মেলাই কাউকে জোর করে ডাকে আনা হয় না মানুষ আপনা-আপনি চলে আসে।এবং এই মেলায় যৎসামান্য যে উপার্জন উপার্জিত হয় তা দিয়ে মাদ্রাসা ও ঈদগাহার কাজ করা হয়।

তবে স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে শোনা যায় বর্তমানে মেলার জৌলুশ আগের থেকে অনেক কমে গেছে। আগের মত পণ্য আর মেলায় আসে না। লোক সমাগমও কমে গেছে। তারপরও বৈশাখ মাস আসলে সবার নজর থাকে মেলার দিকে। বিশেষ করে বাচ্চারা মেলা থেকে ছোট ছোট খেলনা গাড়ি, মাটির পুতুল,মাটির ব্যাংক ইত্যাদি কিনে থাকে। মেলায় দৈনন্দিন কাজের আসবাব পত্র,মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বিভিন্ন কসমেটিকস সামগ্রী বিভিন্ন প্রজাতির ফুলও ফলজ বৃক্ষমেলায় শোভা পায়। মেলায় চারঘাটের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন বেড়াতে আসে। ছোটদের পাশাপাশি বড়রাও মেলা ঘুরতে আসে। মেলার মূল আকর্ষণ হল মেলার বিশেষ জিলাপী। এত সুস্বাদু জিলাপী মেলা চলে গেলে বাজারে আর পাওয়া যায় না। সব মিলিয়ে কাঁসা পুকুরের মেলা ফুলবাড়ী উপজেলার  সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে।


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন