লোক দেখানো অভিযানে ই স্বস্তি প্রশাসনের!
“ অবৈধ যন্ত্রপাতি জব্দ করতে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশকে অপেক্ষা করে উপজেলা প্রশাসনের চলছে চোর পুলিশ খেলা!
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেদারসে চলছে প্রায় শতাধিক ড্রেজার, নির্যাতনের ভয়ে অনেক কৃষকদের অভিযোগ দিতে অনিহা।অনেক কৃষক অভিযোগ দিয়ে ও প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পূর্ব ধইর পশ্চিম ইউপির হাটাশ মালিপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনের জমিতে!
বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নের কাগাতুয়া,কুড়াখাল, দিঘিরপাড় ও ধনপতিখোলা
বিলে, রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বি চাপিতলা বিলে, শ্রীকাইল ইউনিয়নের ভূতাইল,বড়িয়চরা, চন্দনাইল, পিপড়িয়া, উত্তর পেন্নই বিলে, কামাল্লা ইউনিয়নের কালিপুরা, মাহুতিকান্দা ও কামাল্লা পশ্চিম বিলে, সদর ইউনিয়নের ইউছুফপুরের বিলে,
নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের গোমতী নদী ও নবীপুর বিলে
বিলীন হচ্ছে তিন ফসলি জমির (টপ সয়েল) ড্রেজার ও ভেকু মেশিন বসিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করে বিক্রির মহোৎসব চলছে। কৃষি ফসল
উৎপাদন হ্রাসের শঙ্কা।
বিনষ্ট করছেন প্রায় ১০০০ বিঘা কৃষি জমি ও এলজিইডি’র সড়ক।
এতে ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। এসব জমিতে বছরে মৌসুমে ধান, ভুট্টা, ধনিয়া,মসরি, মটর,খেসারী,
সরিষা, রসুন ও শীতকালীন সবজি ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয়। প্রায় ৫০
টি ড্রামট্রাক ও শতাধীক ট্রাক্টরে মাটি যাচ্ছে ইটভাটা ও অপরিকল্পিত বাড়ির কাজে। এভাবেই উপজেলার ২২ ইউনিয়নে চলছে প্রায় ১২০টি ড্রেজার। ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা গুঞ্জন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রায় ২২ ইউনিয়নের ৩০৫টি গ্রামের কোন না কোন স্থানে ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছেন। মাইলের পর মাইল পাইপ সংযোগ দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে উজাড় করা হচ্ছে। ভেকুতে জমির টপ সয়েল ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে তিন ফসলি জমিগুলোকে ৪০ থেকে ৫০ ফুট গভীর গর্ত করা হচ্ছে। এতে আশ-পাশের ফসলী জমি ভেঙ্গে তৈরি হচ্ছে জলাশয়। যেভাবে মাটি বিক্রি হচ্ছে তাতে করে ফসল উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেতে পারে।
বাবুটি পাড়া ইউনিয়নের কৃষক অহেদ মীর, জুনাবআলী মিয়া, কাজী অলিউল্লাহ জানান, গান্দ্রা ভূমি অফিসের অধীনে দৈয়ারা মৌজার মাইনকা বিলে একটানা ২ বছর কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছেন ড্রেজার ব্যবসায়ী কাজী রাকিব ও মোশাররফ। ওরা ৩০ শতক জায়গা ক্রয় করে ড্রেজিং শুরু করেন বর্তমানে ১২০ শতকে চলছে তাদের ড্রেজিং। আশেপাশের জমিগুলো ড্রেজিংয়ের গর্তে পড়ে যাওয়ায় কৃষকরা নাম মাত্র টাকায় জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পায়নি।
জনস্বার্থে রিটকারীর দেয়া তথ্যের সূত্রে জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার কৃষি জমি রক্ষায় মাটি কাটার সকল প্রকার অবৈধ যন্ত্রপাতি ৬০দিনের মধ্যে জব্দ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং এসিল্যান্ডকে রিট ১৪১০৮/২০২২ মোকাদ্দমায় নির্দেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট, নির্দেশনার কয়েক মাস
অতিবাহিত। এ সময়ের মধ্যে ইউএনও এসিল্যান্ড অফিস মিলে কৃষি জমি রক্ষায় গত ১ বছরে ১৫৭ টি ড্রেজার মেশিন জব্দ, ৭,৫০,০০০ টাকা জরিমানা ও ১১ জন ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে,
কৃষি জমি
অভিযানের পর একই স্থানে নতুন মেশিন লাগিয়ে আবারো চলে মাটিখেকোদের কাজ,
জনগণ মনে করে প্রশাসন থেকে ও এরা শক্তিশালী!
বিশাল এ উপজেলায় দেদারসে চলছে ড্রেজার, ভেকু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর।
উল্লেখ্য - ৬০ দিনের মধ্যে মুরাদনগর উপজেলার সকল প্রকার অবৈধ মাটিকাটার যন্ত্রপাতি জব্দ করতে ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার ১২ দিন পর কৃষক খোকন মিয়ার জমি থেকে ভেকু দিয়ে রাতে মাটি তুলে নিচ্ছিল এতে বাঁধা দেওয়ায় মাটি ব্যবসায়ীরা তাকে হত্যা করেন।
এঘটনার পর উপজেলার কৃষকরা প্রাণ নাশের ভয়ে মাটি উওোলনে বাঁধা বা অভিযোগ দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন।
ড্রেজারের গর্তে পড়ে কয়েকজন নিহত হওয়ার পর ও নরে চড়ে বসেনি প্রশাসন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি বলেন কোথায় কোথায় ড্রেজার চলে তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নিব, এছাড়াও এ অবৈধ ড্রেজারের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে।