নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের শ্রীপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ফেসবুক বন্ধু অজ্ঞান করে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের হায়তখারচালা গ্রামের কুটুমবাড়ি এলাকায়। ঔই দিন রাতেই স্থানীয় থানায় দলবদ্ধ ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেছেন কলেজ ছাত্রীটির বাবা।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা জানান, পরীক্ষা দিয়ে কলেজের মূল ফটকের সামনে থেকে এক বন্ধুর দেওয়া ডাবের পানি খাওয়ার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে তাঁর মেয়ে। এরপর ওই বন্ধু ও তার কয়েকজন সহযোগী মিলে সিএনজি অটোরিকশায় করে তাঁকে নির্জন স্থানে নিয়ে পালা পালাক্রমে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। মেয়েটির বাবা আরো জানান, বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় তার মেয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর (১৭) বাড়ি গাজীপুরের সদর উপজেলায়। সে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
অভিযুক্ত ফেসবুক বন্ধু মো. স্বাধীন জয় (২৩)-এর বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার লোহাগাছ গ্রামে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত ধর্ষকদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর বাবা বলেন, গতকাল সকাল ১০টায় ক্লাস পরীক্ষা দিতে কলেজে যায় তাঁর মেয়ে। কিন্তু ক্লাস পরীক্ষা শেষ হয়ে বিকেল হয়ে গেলেও তাঁর মেয়ে বাড়িতে ফেরেনি। এরপর তিনি মেয়ের মোবাইল ফোনে ফোন করেন। কিন্তু মেয়ে ফোন রিসিভ করেনি। তিনি বলেন, ‘এরপর আমি নিজেই কলেজে যাই। কলেজে গিয়ে জানতে পারি পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেক আগেই, আর আমার মেয়েও কলেজ থেকে চলে গেছে। এরপর আমি পুনরায় কল দিলে অজ্ঞাতনামা ছেলেরা ফোন রিসিভ করে, জানায় আমার মেয়ে অজ্ঞান অবস্থায় গোসিঙ্গা ইউনিয়ন হায়াতখারচালা গ্রামের কুটুমবাড়ি এলাকায় পড়ে আছে। তারা তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠিয়ে দেয়। এরপর অটোরিকশাচালক আমাকে কাপাসিয়া রোডের আশামনি বাগানের কাছে যেতে বলেন। পরে আমি ওখানে গিয়ে মেয়েকে পাই। ওই চালকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, কুটুমবাড়ি এলাকা থেকে কয়েকজন ছেলে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে শ্রীপুর নিয়ে আসতে বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। রাতে জ্ঞান ফিরলে ঘটনার বিস্তারিত জানায় আমার মেয়ে। আমার মেয়ে আমাকে জানায়, স্বাধীন জয় তার ফেসবুক বন্ধু, সে সুবাধে তার সঙ্গে দেখা করতে কলেজের সামনে আসে। পরীক্ষা শেষে কলেজ থেকে বের হওয়ার পর গেটের সামনে এলে একটি ডাব খেতে দেয়। ডাব খাওয়ার পরপরই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন কয়েকজন মিলে একটি মাটির ঘরে নিয়ে আমার মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে।
ওই ছাত্রীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন এ বিষয়টি ওই ছাত্রীর মা আমাকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেছেন। বিষয়টি যেহেতু কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে সে জন্য তার অভিভাবক আইনের আশ্রয় নেবেন। কলেজের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত জেনে তদন্ত করে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Tags
বাংলাদেশ