নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
একদিকে তীব্র তাপদাহ অন্যদিকে চরম বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারনে সাধারন মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নাবিশ্বাস। বিভিন্ন এলাকায় বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় এবং একজন শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনায় সরকার সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গতকাল (বৃহস্পতিবার) বন্ধ ঘোষনা করা হয়। প্রচন্ড গরম ও বিদ্যুৎ এর লোডশেডিং এ জনজীবন অসহনীয় হওয়ায় শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধের সিদ্ধাস্ত নেন শিক্ষা অধিদপ্তর।
সরকারের এ আদেশ মেনে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষা অধিদপ্তরের এ সিন্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আইনকে তোয়াক্কা না করে মামুদনগর ইউনিয়নের বাড়ীগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে অর্ধ বাষিক পরিক্ষা নিলেন প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন । বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে বাড়ীগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজে অর্ধ বাষিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে ৯ম/১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা। সরকানি নির্দেশনা উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষক তার একক ক্ষমতা বলে বিদ্যালয়ের পরিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, সবকারি নির্দেশে সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও নাগরপুর উপজেলার বাড়ীগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজে প্রচন্ড গরমে নেয়া হচ্ছে ৯ম/১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা। বাড়ীগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন কে এসময় বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি পরীক্ষা শুরু করে দিয়ে বাড়ী চলে যান বলে জানিয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পরিক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা বলেন, আমরা টিভির খবরে শুনেছি শ্রেনী কার্যক্রম বন্ধ। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমরা পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছি। পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্র ছাত্রীরা বন্ধের কথা জানলেও প্রধান শিক্ষক বাধ্য করছে পরীক্ষা দিতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্বেও কি ভাবে প্রধান শিক্ষক পরিক্ষা নিচ্ছেন। তার খুটির জোড় কোথায় এটাই এখন প্রশ্ন।
এ বষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিনের মুঠোফোন (নং ০১৭৪৮৯২২২৬৪) কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সভাপতি মো. ফজলুল রহমান বলেন , আমি সকল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বন্ধের বিষয়টি জানিয়েছি। যদি কোন প্রধান শিক্ষক তার শ্রেনী কার্যক্রম ও পরীক্ষা নিয়ে থাকে সেটা তার বিষয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, সরকারি বন্ধের দিনে বাড়ীগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আলমাছ উদ্দিন কেন পরিক্ষা নিয়েছে এজন্য তাকে শো-কজ করা হয়েছে। জবাব সন্তসজনক না হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে।
সরকারি নির্দেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কোন ক্ষমতা বলে প্রধান শিক্ষক মো. আলমাছ উদ্দিন পরিক্ষা নিচ্ছেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, তাপ প্রবাহের কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর। বিদ্যালয়ে কোন ভাবেই পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।