হাফেজ নজরুল, কুমিল্লা :
জান্নাত আক্তার ও তার চার বছরের শিশুকন্যা। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে গৃহবধূ ও তাঁর চার বছরের কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিশুটিকে বিছানা থেকে এবং মাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের নিজ ঘর থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত গৃহবধূর নাম জান্নাত আক্তার। তিনি উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী আবুল কালামের স্ত্রী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল হক জানান, পাঁচ বছর আগে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী আবুল কালামের সঙ্গে একই উপজেলার জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাঁদের একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পাঁচ মাস আগে আবুল কালাম ছুটি শেষ করে সিঙ্গাপুরে ফিরে যান।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য আবদুল হক বলেন, বুধবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাবার খেয়ে জান্নাত আক্তার তাঁর শিশুসন্তানকে নিয়ে নিজের ঘরে ঘুমাতে যান। প্রতিদিনের মতো সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় শাশুড়ি ঘরের দরজায় ডাকতে থাকেন। দীর্ঘক্ষণ কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ির অন্য লোকজনসহ স্থানীয়দের ডেকে আনেন। স্থানীয়রা ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মরদেহ দুটি দেখতে পান এবং বুড়িচং থানায় খবর দেন।
বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সকাল ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘরের বিছানায় একটি শিশুর মরদেহ এবং পাশেই ফ্যানের সঙ্গে ওড়না নিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল শিশুটির মা।’
ওসি আরও বলেন, ‘শিশুটির গলায় তার প্যাঁচানো ছিল। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ আবু তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারি, স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ঝগড়া করে শিশুসন্তানকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছে।’
এ ঘটনায় বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দুটি মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় একটি হত্যা ও একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয় করা যাবে।’
এদিকে, কুমিল্লার হোমনায় এক রশিতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মা ও শিশু ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পৌর সভার ৩নং ওয়ার্ডের ফকির বাড়ী থেকে তাদের দেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত মা সানজিদা (২০) হোমনা ফকির বাড়ীর মো. বাবু মিয়ার স্ত্রী ও আব্দুল্লাহ (২) ওদের একমাত্র সন্তান।
এই ঘটনায় নিহত সানজিদার স্বামী মো. বাবু মিয়া ও তার মাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে।
এদিকে নিহত সানজিদার বাবা মো. রনি ভূঁইয়ার অভিযোগ স্বামী ও শ্বাশুড়ী মিলে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। তিনি মামলা করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে হোমনা থানা ও.সি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, ধারণা করছি মান-অভিমান থেকে একই রশিতে শিশু ছেলেকে নিয়ে মা আত্মা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সানজিদার স্বামী ও শ্বাশুড়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি।