Daily News BD Online

নওগাঁর মান্দায় ভাইদের জমির ভাগ না দিয়ে স্ত্রীকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষণের মামলা


এ.বি.এম.হাবিব :

নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের গাইহানা গ্রামের মৃত শামসুদ্দিনের বড় ছেলে সাইদুর রহমানের কাছে, তার আপন ছোট দুই ভাই শহিদুল ও শাহিনুর  জমির ভাগ-বাটোয়ারা চাইতে গেলে, জমির ভাগ- বাটোয়ারা না দিয়ে,তার নিজ স্ত্রীকে দিয়ে,মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টার মামলা দিয়েছে। জমির ভাগ না দিয়ে এমন শক্ত মামলায় ফায়দা হাঁসিল করতে চাচ্ছে সাইদুর রহমান এমনি অভিযোগ করছে ভুক্তভোগী সহ এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের গাইহানা গ্রামের সামসুদ্দিন ৩ ছেলে, সাইদুর রহমান, শহিদুল,শাহিনুর, ৩ মেয়ে মোছাঃ আম্বিয়া খাতুন, মোছাঃ আয়েশা পারভীন, মোছাঃআফরোজা খাতুন ও স্ত্রীকে রেখে প্রায় ২বছর পূর্বে মারা যান। সবার বড় ছেলে সাইদুর রহমান বাবার সকল সম্পত্তি দেখা-শুনা করতো। তার নিজ সংসারের জন্য, কয়েক বিঘা জমি পার্শবর্তী গ্রামের রইচ উদ্দীনের নিকট টাকার বিনিময়ে বন্ধক রেখেছে সে, যা অন্য ভাইবোনদের জানায় নাই। বড় ভাইয়ের এসব কান্ড দেখে ছোট ভাই শহিদুল ও শাহিনুরসহ বাঁকী ৩বোনেরা মিলে, বড় ভাই সাইদুর রহমানকে এসব জমি বন্ধক রাখতে নিষেধ করেন বার বার।

কিন্তু সাইদুর রহমান তাদের কথাকে গুরুত্ব না দিলে,বাঁকি ৫ভাই-বোন একত্রিত হয়ে তাদের মাকে সাথে নিয়ে, বড়ভাই সাইদুর রহমানের বাড়ীতে যায় এবং সকলের অংশ হিসেবে জমি-জমা বুঝিয়ে দিতে বলে। তাদের  মা জানান, সেদিন সাইদুর রহমান বলে, জুন মাসের ১তারিখে সব জমি-জমা বাটোয়ারা করে বুঝিয়ে  দেবে বলে জানায়।
সাইদুরের উল্লেখিত তারিখ গত (১জুন) বৃহস্পতিবার বৈকাল ৪টার সময় দু,ভাই শহিদুল,শাহিনুর,৩ বোন,তাদের মা ও জমি মাপ-যোগের আমিনদারসহ বড়ভাই সাইদুর সহ সকল জমি-জমা মাপ যোগ শেষে সাইদুরের বাড়ীতে সকলকে যেতে বলে এবং ২ভাই,৩বোন, মা ও আমিনদার মিলে তার বাড়ীতে যায়। সেখানে তাদের বাবার সকল সম্পত্তি হিসেব নিকেশ করে। হিসেব শেষে ভাগ করার সময়, বড়ভাই সাইদুর যেগুলো জমি বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছে,সেই জমি বোনদের  ভাগ করে দিতে চাইলে সেখানে তর্ক-বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তাদের মা রশেদা বেগম ও ৩ বোন জানায়, যে জমি গুলো বন্ধক রেখে, ব্যাক্তিগত ভাবে টাকা নিয়েছে সাইদুর, সেই জমি সাইদুরকে নিতে বলে দুই ভাই কিন্তু সাইদুর তা নেবে না এবং টাকা গুলো দিয়ে, জমি গুলো ছাড়িয়েও দেবে না। এ নিয়ে মা ও বোনেরা প্রতিবাদ করে এর সাথে শহিদুলও কথা বলতে লাগলে, সাইদুর কাঠের চেয়ার তুলে ছোটভাই শহিদুলের মাথায় আঘাত করে এতে শহিদুলের কপাল ও মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়। স্থানীয়রা জানায়, চিৎকার শুনে আশে-পাশের সকলে সাইদুরের বাড়ীতে গিয়ে দেখতে পায়, শহিদুলের মাথা দিয়ে রক্ত ঝড়ছে এবং খুব ঝগড়া চলছিল। তাদের মা রশেদা বেওয়া জানায়,কোন মামলা মকর্দমা যেন না হয়,সব কিছু পরবর্তীতে আলোচনা করে আপোষ করা হবে। ৩ছেলেকেই জানিয়ে দেয়। ছোট ছেলে শহিদুল স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়ে চুপ করে থাকে কিন্তু বড় ছেলে গোপনে নওগাঁ আদালতে গিয়ে নিজ স্ত্রীকে বাদী করে আপন দুইভাইকে আসামী করে মিথ্যা,সাজানো একটি ধর্ষণের চেষ্টার মামলা করে, যাহা খুবই নিন্দনীয় এবং বানোয়াট বলে সাইদুরের মা রাশেদা বেওয়া জানান। তিনি বলেন,সেখানে সে সহ ৩ছেলে ৩মেয়ে এবং এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলো। এমন সাঁজানো মিথ্যা মামলায় তিনি খুব দুঃখ প্রকাশ করেন। স্থানীয়রা এমন মামলার কথা শুনে হতাশ হয়ে জানায়, কি যুগ এসে গেলো, জমি-জমা নিয়ে ভাইয়ে-ভাইয়ে গোন্ডগোল, আর কিভাবে  নিজের আপন দু,ভাইকে ধর্ষণের চেষ্টার আসামী বানিয়েছে এবং নিজ স্ত্রীকে দিয়ে।  স্থানীয়রা এমন নেক্কার জনক কাজের জন্য সাইদুর রহমানকে ধিক্কার জানায়।

এ বিষয়ে ভিকটিম সেলিনা খাতুনকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে, তিনি কিছুই বলতে পারবেন না,যা কিছু জানতে হলে, তার স্বামী সাইদুর রহমানের কাছে যেতে হবে বলে জানান। সে কোথায় আছে,এমন প্রশ্নে তিনি দেলুয়াবাড়ীতে দোকান করেন,সেখানে গিয়ে সবকিছু জানতে সাংবাদিকদের  বলেন। আপনি নিজে ভিকটিম, সেদিন কি ঘটেছিলো জিজ্ঞাসা করলেও একই কথা বলেন তিনি।

দেলুবাড়ীতে গিয়ে সাইদুর রহমানের দোকান বন্ধ দেখে তার মোবাইল নং নিয়ে, ফোন করলে তিনি বলেন, যাহা কিছু বলার আদালতে তিনি বলবেন।   সেদিন, সে সময়ে আপনার মা,বোনসহ সকলে উপস্থিত ছিলো কি-না এবং তাদের সামনেই কি ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলো কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, টাকা নিয়েছি আমি,জমিও আমি ফেরত নিয়ে দেবো।  কিন্ত এ নিয়ে আমারই ছোট ভাই-বোন আমার উপর এতো ক্ষিপ্ত হবে কেন? আমাকে কিছুদিন সময় দিলেই তো আমি জমি গুলো উঠিয়ে দিতাম। আরো অনেক কিছু আছে,আমি অসুস্থ আর কথা বলতে পারবো না। কিন্তু ধর্ষনের চেষ্টার বিষয়টা আসলে কি,,এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি না দিয়ে বলেন,সকল কিছু আদালতে বলবো,আপনাদের আর কিছু বলা যাবে না বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

শহিদুল ও শাহিনুরসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, সাইদুর রহমানের বউ সেলিনা এর আগেও কয়েকজনকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে আপোষ হয়েছে। এলাকায় যেকোন বিষয় নিয়ে কথা কাটা-কাটি হলে শুধু মামলার ভয় দেখায়। তারা জানায়,সেলিনা নিজেই একাধিকবার তার স্বামী সাইদুরকেও  মারপিট করেছে খুব দজ্জাল মেয়ে তাই স্থানীরা তার সাথে কথা বলতেও ভয় পায় বলে জানায়।
শহিদুল ও শাহিনুর বলেন, তাদের ভাবী সেলিনা ও ভাই সাইদুর রহমান বিভিন্ন লোকজন ঠিক করেছে তাদেরকে মেরে ফেলার জন্য, তাই ভয়ে তারা দোকানপাট খুলতে যেতে পারছেনা এবং নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তারা বলেন, তাদের দু,ভাইকে মেরে ফেলতে পারলে, বোনেরাও ভয়ে আর জমি চাইতে আসতে পারবেনা এটাই সাইদুর রহমান ও তার স্ত্রী চাচ্ছে। বর্তমানে তারা জমির ভাগ না দিতে, পৃথিবীতে সব কিছু করতে পারবে বলে জানান।

এ বিষয়ে কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নওফেল মন্ডল এর কাছে মোবাইলল ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, ওখানে গত কিছুদিন আগে,বড় ছেলে সাইদুর জমি বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছে,সেই জমি বোনদের  ভাগ করে দিতে গেলে, ভাইবোনদের মধ্য জমিজমা বিষয়ে ছোট-খাটো গোন্ডগোল হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু ধর্ষণের চেষ্টা এগুলো শুনি নাই বা এমন কোন ঘটনা ঘটলে,গ্রামের চৌকিদারেরা এখন খুব সজাগ,তিনি জানতে পারতেন বলে জানান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন