মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগরে (ক) খতিয়ানের সরকারী সম্পত্তি নিয়ে আপিল মামলা চলমান ও জায়গার কমিশন হওয়ার পরও ইউএনও'র নির্দেশে ১২ শতক জায়গা দখল করে নেওয়ার অভিযোগ।
উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের দারোরা সার্বজনীন কালিমন্দিরের পাশে এমন ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে জোরপূর্বক ওই জায়গায় বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করেন মন্দির কমিটির লোকজন । এতে পাশের বাড়ির ৫টি পরিবারের চলাচলের রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
সূত্রে জানাযায়, ১৯৭৫ সালে এই সম্পত্তি খরিদ করেন আবুল হোসেন। সিএস খতিয়ানের দলিল সূত্রে মালিক তিনি। বিএস জরিপে জায়গাটি বাংলাদেশ সরকার জেলা প্রশাসক কুমিল্লা নামে উঠে।
আরএস খতিয়ানে জায়গাটি ভিটি বাড়ি। বিএস-এ পজিশন দেখায় শশ্মাণ। একারণে আবুল হোসেন বাদী হয়ে সরকারকে বিবাদী করে মামলা করেন । মামলা নং- ১১০/২০১৮ আপিল।
মামলা চলমান অবস্থায় জায়গাটি বেদখল হওয়ার ভয়ে কমিশন চাওয়া হলে মহামান্য আদালত কমিশন গ্রহণ করেন। জায়গাটি কালীমন্দিরের সাথে হওয়ায় মন্দির কমিটির লোকজনের চোখ পড়ে এই সম্পত্তির উপর। তারা উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক অনুমোদনে ওই সম্পত্তি দখলের পায়তারা করে প্রাচীর নির্মাণ করছেন এবং এটি কালীমন্দির শ্মশানের জায়গা বলে দাবি করছেন।
সরেজমিন গিয়ে মন্দির কমিটির লোকজনের সাথে কথা হলে তারা এই জায়গার মালিকানা কিংবা লিজের কোন কাগজ দেখাতে পারেননি।
মন্দির কমিটির সভাপতি চিত্ররঞ্জন জানান, জায়গাটি বিএস খতিয়ানে মালিক জেলাপ্রশাসক। এর শ্রেণী শশ্মাণ হওয়ায় ইউএনও স্যার আমাদের কাজ করার অনুমতি দিয়েছেন।
জায়গার মালিক দাবিকারী আবুল হোসেন (৭০) বলেন, “আমি ১৯৭৫ সালে রায়হরন সূত্রধর থেকে জায়গা খরিদ করেছি। প্রায় ৫০ বছর এই জমিতে হলুদ, মরিচসহ নানা জাতের ফসল ফলিয়ে আসছি। বিএস জরিপে ভুলক্রমে সরকারী খতিয়ানভূক্ত হওয়ায় আমি আদালতে মামলা করি। কোর্টে মামালা চলমান অবস্থায় এখন কালিমন্দিরের লোকজন বলপূর্বক জায়গা দখল করে নিচ্ছেন। আমরা বাঁধা দিলে তাঁরা প্রশাসনের ভয়ভীতি দেখায়।
আবুল হোসেনের ছেলে আইয়ূব (৪৫) বলেন, আমি ইউএনও স্যারকে সব খোলে বলার চেষ্ট করছি তিনি আমার কোন কথাই শুনেন না। এছাড়াও আইনি সহায়তা পাওয়ার আবেদন করলে তিনি তা গ্রহণ করেননি। শুধু একটা কথাই বলছেন যদি তুমি কোর্টে জায়গা পাও তাহলে আমার সাথে এসে দেখা করো।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান আমরা দীর্ঘদিন যাবত দেখে আসছি এই জমি আবুল হোসেন চাষাবাদ করে আসছেন। এবং সরকারের সাথে তার মামলা চলছে। কিন্তু এখন দেখি মন্দিরের নাম করে কিছু লোক জমিটি ভরাট করে প্রাচীর নির্মাণ করছেন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি বলেন, শ্বশ্মাণ- মন্দির এগুলো জেলা প্রশাসকের নামেই হয়। জায়গা দখলের অনুমতি দিয়েছেন প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন কে বলছে আপনাকে ? আমি এমন কথা বলিনি।
বিদ্রঃ এই নিউজে জায়গা দখলকারীর ভিডিও বক্তব্য আছে যেখানে তিনি স্পষ্ট বলছেন ইউএনও নির্দেশে আমরা কাজ করছি। সরকারকে বিবাদী করে যারা মামলা করছেন তাদেরও একই বক্তব্য যার ভিডিও আছে প্রতিবেদকের হাতে”।
Tags
বাংলাদেশ