প্রবাস ডেস্ক, নিউইয়র্ক : কমিউনিটি সেবায় অনবদ্য অবদানের জন্য আবারও সম্মানিত হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে পরিচিত মুখ, সু-সময় ও দুঃসময়ের বন্ধু ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। কংগ্রেশনাল, নিউইয়র্ক স্টেট গভর্ণর, নিউইয়র্ক সিটি মেয়র, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট, অ্যাসেম্বলি সিটি কাউন্সিলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অবদানের স্বীকৃতির ধারাবাহিকতায় এবার তাকে সম্মানিত করে স্বীকৃতি দিয়েছে নিউইয়র্ক ষ্টেটের অ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক ২৯।
কমিউনিটি সেবায় বিশেষ অবদানের জন্য নিউইয়র্ক ষ্টেটের অ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক ২৯ এর নির্বাচিত সদস্য অ্যালিসা এল হ্যান্দম্যান বিশিষ্ট তরুণ সংগঠক ও সমাজসেবী ফখরুল ইসলাম দেলোয়ারকে প্রোকলেমেশন প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করেন।
সম্প্রতি এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে অ্যালিসা হ্যান্দম্যান সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে প্রোকলেমেশন হস্তান্তর করেন। নিউইয়র্কের অন্যতম সফল সামাজিক সংগঠন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার কিশোর বয়সে প্রবাস জীবন শুরুর পর থেকেই কমিউনিটির সেবার জন্য নিজেকে নিবেদিত করেনল। ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি প্রতিষ্ঠায় নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স বরোর বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকার কিশোর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ফ্রেন্ডস সোসাইটির পতাকাতলে একত্র করেছেন। ২০০০ সালে ফ্রেন্ডস সোসাইটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিউইয়র্কের তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপটে অস্থির এক সময়ের স্রোতের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেই এগিয়েছেন ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও তার সাথীরা। সেসব এখন ইতিহাস। আর ইতিহাসের পথ ধরেই জ্যামাইকার ‘ছোট কমিউনিটি বড়’ করতে অবদান রেখে চলেছে তারই প্রতিষ্ঠিত ফ্রেন্ডস সোসাইটি। উল্লেখ্য, জ্যামাইকার বাংলাদেশী কমিউনিটি গড়ার মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার-জেএমসি। মূলত এই সেন্টার ঘিরেই জ্যামাইকায় গড়ে উঠেছে বিশাল বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর জনপদ।
ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার শুধু জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা বা বর্তমান সভাপতিই নন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম কমিউনিটির অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার-জেএমসি’র পরিচালনা কমিটির জয়েন্ট সেক্রটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মূলধারার রাজনীতির পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করেছেন কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন-এবিবিএ, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী সিলেটবাসীর আমরেলা সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসীর ঐক্যের প্রতীক বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার তার সামাজিক কর্মকান্ডের অনন্য অবদানের জন্য চলতি বছর নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের বাসায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মেয়র এরিক অ্যাডাস কর্তৃক সম্মানিত হয়েছেন। পেয়েছেন ইউএস কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, ষ্টেট সিনেটর জন লু, ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন ও সিটি কাউন্সিলম্যান জেমস জিনারো সহ বিশিষ্ট রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ সম্মাননা। সেই পথ ধরেই তিনি আবারো সম্মানিত হলেন নিউইয়র্কের অ্যাসেম্বলী ডিস্ট্রিক ২৯ থেকে।
সম্মাননা ও স্বীকৃতি প্রাপ্তি প্রসঙ্গে ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, স্বীকৃতি, পুরস্কার বা সম্মাননার জন্য কখনো সামাজিক কাজে নিজেকে নিবেদিত করিনি। যতটুকু করতে পেরেছি বা পারছি তা মানুষের প্রতি ভ্রাতৃত্ববোধ, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও ভালো লাগা থেকে করছি। তবুও কোন পুরস্কার, স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেলে ভবিষ্যতে সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে নিবেদিত করতে আরও উৎসাহিত হই, অনুপ্রাণিত হই। তবে আমার সবচেয়ে বড় পুরস্কার হচ্ছে কমিউনিটির অগনিত মানুষের নিরেট ভালোবাসা। যা যে কোন পুরস্কারের চেয়ে বেশি মূল্যবান। কিশোর বয়স থেকে যে সেবামূলক কাজ শুরু করেছি, আমৃত্যু তা করে যেতে চাই। কমিউনিটির প্রতিটি মানুষের সুখে দুঃখের সঙ্গী হয়ে পাশে থাকতে চাই। এটাই আমার মানসিক প্রশান্তির বড় স্থান।
Tags
প্রবাস