চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জে পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। এতে উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড জাইটপাড়া, বোগলাউড়ী লক্ষ্মীপুর এবং দূর্লভপুর ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড চরজগনাথপুর, আইয়ুব আলী বিশ্বাসপাড়া, পন্ডিতপাড়া এবং মনোহারপুর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে একটি মসজিদ, দুইশ বসতবাড়ি ও ৩০ হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে নদীর দুপাড়ে কয়েকশ স্থাপনা।
নদী তীরবর্তী বাসিন্দা ফাইজুউদ্দিন (৬৫) বলেন, ২০ দিন ধরেই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে আমার সাড়ে তিন বিঘা জমির ধান নদীতে চলে গেছে। আমি অনেক কষ্টে স্থানীয় গ্রামবাসীর থেকে ৬৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু এ ধান আর আমার ঘরে উঠলো না। তিনি আরও বলেন, গত আট বছর থেকেই এ সময় আমাদের বাড়ি ভেঙে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আমাদের দেখার কেউ নাই, পাই না কোনো সরকারি সুবিধাও।
দুলাল রহমান (৫৫) নামে এক ধান চাষি বলেন, অনেক কষ্টে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু মাত্র ২০ দিনের ভাঙনে
তিন বিঘা ধান এখন নদীগর্ভে। আমি এখন কী খেয়ে বাঁচবো। জমিতে আমার একটি পানির পাম্প ছিল সেটিও নদীতে হারিয়ে গেছে।
সরজমিনে শিবগঞ্জ উপজেলার নদী ভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে সাধারন মানুষের সাথে কথা বলতে গেলে জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সেলিম রেজা বলেন, আমাদের বাড়ি পাঁকা ইউনিয়ন। নদীভাঙনে আমাদের এলাকার মানুষ খুব কষ্টে রয়েছে। প্রতিদিন শতশত কৃষি জমি কিংবা বাড়িঘর নদীতে ভেঙে পড়ছে।
গ্রামবাসী আরও বলেন, জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষা হবে না। জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষার ক্ষেত্রে পাঁকা ইউনিয়ন ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড এর এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সরকারি ভাবে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত এই গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য জিওব্যাগ বা অন্য পন্থা থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ফলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন বলেন,শুনেছি নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে জিওব্যাগ দিয়ে নদীভাঙন রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ চলছে।মনোহারপুর থেকে উজিরপুর সাড়ে ১২ কিলোমিটার স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের কাজ আরম্ভ করার জন্য প্রজেক্ট তৈরি করা হচ্ছে। প্রায় পনেরশো কোটি টাকা ব্যায়ে এ প্রজেক্টে ডিসেম্বর মাস থেকে জানুয়ারি মাসে এ প্রজেক্টটি দাখিল করিবো। এ প্রজেক্ট প্রায় পনেরশ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। সেখানে নদীভাঙন আরো ভিতরে চলে না যায় এজন্য অস্থায়ীভাবে জিওব্যাগ দিয়ে ঠেকানো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
Tags
বাংলাদেশ