Daily News BD Online

স্বাক্ষর জালিয়াতি, টাকা হাতিয়ে ও মিথ্যা মামলা চক্রের মূলহোতা মীর আমিনুল



 # চক্রে রয়েছে ৫-৬জন সদস্য

# এমএলএম ব্যবসার আড়ালে গ্রাহকের সাথে প্রতারণা করাই তাদের কাজ 
 
নিজস্ব প্রতিবেদক :
 
অন্যের স্বাক্ষর স্ক্যানের মাধ্যমে জাল করে,  কখনও মিথ্যা মামলার বাদী আবার কখনও  সাক্ষী বুনে যান। এভাবে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এই চক্রের প্রধান হলেন, একটি বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মীর আমিনুল ইসলাম ও সালাউদ্দিনসহ কয়েকজন।
 
তাদের করা একটি মামলায় আসামী পক্ষের স্বাক্ষর জাল বলে কোর্টে স্বাক্ষর ফরেনসিক করানোর আবেদন করলে তা দেয়া হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে।
 
বাদী পক্ষের আইনজীবি মনির হোসেন শাওন বলেন, এর আগেও এই একই চক্র প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করেন। যার প্রতিটি মামলা ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। এবং খালাস হয়ে যায়। এই চক্রের পিছনে রয়েছে জাতীয়পার্টির প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা। এই চক্রের প্রধান বিএনপি নেতা তাবিদ আওয়ালের এইচ আর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন সেই মীর আমিনুল ইসলাম। মূলত ঘটনা হচ্ছে ১৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করেছেন মীর আমিনুল ইসলামের চক্রটি। আর এইটাকে ধামাচাপা দিতেই স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মিথ্যা মামলা করেন।
 
 তিনি বলেন, এই মামলায় হাসিবুল ইসলাম জয় না থাকলেও ওয়াহেদুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনেন উইং কমান্ডার মীর আমিনুল ইসলাম। যা জালিয়াতি কাগজপত্রের মাধ্যমে পূর্বাচল মডেল স্যাটেলাইট এর পক্ষে উকিল মনির হোসেন শাওন আদালতে মীর আমিনুল ইসলামকে জেরার মুখে চ্যালেঞ্জ করে বসেন বাদীর উক্ত স্ট্যাম্পসহ সকল কাগজপত্র জালিয়াতি করে মামলা দায়ের করেছেন। বিচারকের কাছে প্রার্থনা করে সেই সকল কাগজ ও স্ট্যাম্প জব্দ করে সিআইডির ফারেন্সিক ল্যাবে পাঠানোর জন্য বিচারিক আদালত-৯এর বিচারককে অনুরোধ জানান। এতে সিআইডি ফারেন্সিক ল্যাবের রিপোর্ট উক্ত আদালতে গত সপ্তাহে জমা হয় এতে প্রমাণ করে যে সাবেক উইং কমান্ডার মীর আমিনুল ইসলাম সহ সালাউদ্দিন সম্মিলিতভাবেই পূর্বাচল মডেল স্যাটেলাইটের এডমিন ওয়াহেদুল ইসলাম রানার স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছেন।
 
সিআইডির ফরেনসিক হস্তলিপি বিভাগ থেকে আদালতে পাঠানো হস্তলিপি বিশারদের বলা হয়েছে,  নোটারী পাবলিক করা প্রাপ্ত দলিলপত্রাদি সংগ্রহ করেন। স্বাক্ষর সমূহগুলো ল্যাবে দিয়ে পরিক্ষা করা হয়। পরিক্ষা কার্যক্রম পর্যালোচনাতে বলা হয়, ফরেনসিক বিভাগে হস্তলিপি ব্যুরোতে থাকা ম্যাগনিফাইয়ার ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে যথাযথ যত্ন ও সতর্কতার সাথে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয় বলে জানান।
 
এরপর সেই রিপোর্টে বলা হয়, উপরোল্লিখত পরিক্ষান্তে এই সিদ্ধানে উপনিত হলাম যে, নোটারী পাবলিক কার্যালয়ের ১৩ এপ্রিল ২০২১ সালের ১০০ শত টাকা মূল্যমানের স্ট্যাম্প যার নং খ.ঙ ৭৩৭৭০৫৭ হতে খ.ঙ ৭৩৭৭০৫৯ এর মাধ্যমে সম্পাদিত আপোষনামা যার রেজিস্ট্রেশন নং ১৪. ১৩ এপ্রিল ২০২১ বিদ্যমান ক, ক-১ হতে ক-৩ চিহৃ স্বাক্ষরসমূহ স্ক্যান করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
 
আইনজীবী মো. হাসেম উদ্দিন বলেন, সাবেক উইং কমান্ডার নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে এর আগেও পূর্বাচল মডেল স্যাটেলাইট সিটির এডমিন ওয়াহেদুল ইসলাম রানাসহ উক্ত প্রতিষ্ঠানের এমডি হাসিবুল ইসলাম জয়ের নামে  মিথ্যা ও ভুয়া মামলা দিয়ে মেগাসিটির কার্যকরী পরিষদ ও পরিচালনা পরিষদের এমডি সাবেক উইং কমান্ডার মীর আমিনুল ইসলামসহ চক্রের অন্য সদস্যরা।পরে চক্রটি মিলে মানুষের ১৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। সকল অপরাধ থেকে নিস্তার পেতে এই সমস্ত জালিয়াতি কাগজ তৈরি করে দ্বায় অন্যের কাঁধে চাপানোর অপচেষ্টা চালিয়েছেন ।
 
তিনি বলেন, মূলত ঘটনা হচ্ছে পূর্বাচল মডেল স্যাটেলাইট টাউন চুক্তির মাধ্যমে মেগা স্যাটেলাইট সিটির মালিক সাবেক এম ডি রেজাউল করিমসহ কোম্পানির অন্যান্য সদস্যদের কাছে জমি বিক্রি ও তাদের নিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবসার ১৫টি বাস নির্ধারিত মূল্য বিক্রয় করে। এতে পর্যায়ক্রমে মেগা স্যাটেলাইট সিটি পর্যায়ক্রমে টাকা পরিশোধ করে আসছিলেন। কিন্তু পরবর্তী হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা টাকা বন্ধ করে দেওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এরপর উকিল নোটিশ পাঠানো হয় পূর্বাচলের এমডি হাসিবুল ইসলাম জয়কে। কিন্তু সেই উকিল নোটিশের জবাব না পাওয়ায় মেগাসিটির বিরুদ্ধে ১৩/১০/২০১৯ এ একটি মামলা দায়ের করেন ২ কোটি টাকা পাওনা  ও জালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করেন,যার মামলা নং ১৫৭/২০। এই মামলা দায়ের উপস্থিতিটের পেয়ে মেগা স্যাটেলাইট সিটি দ্রুত তারা কার্যকরী পরিষদের মিটিংয়ে বসে রেগুলেশনে পাস করে মীর আমিনুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজিং ডিরেক্টর করে এবং সেই সাথে মেগা স্যাটেলাইট সিটির পুরো ব্যবসায়িক কমিটি চেঞ্জ করে মিথ্যা ভুল অপবাদ দিয়ে পূর্বাচলের বিরুদ্ধে জালিয়াতি কিছু কাগজপত্র তৈরি করে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন