নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ৮নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রামগাঁ গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শিবকালী বিগ্রহ মন্দিরের নামে ৩.০৪ একর জমি ৩জন মিলে জবরদস্তি করে জবর-দখল করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার রামগাঁ গ্রামের শিবকালী বিগ্রহ মন্দিরের নামে ৩.০৪ একর জমি উক্ত গ্রামের শ্রী ব্রজেন্দ্রনাথ মন্ডল,পিতা মৃত-শ্রীমন্ত মন্ডল,শ্রী বিষ্ণপদ মন্ডল, শ্রী গবিন্দ্র চন্দ্র মন্ডল, উভয় পিতা-মৃত হরকান্ত মন্ডল এই ৩জন মিলে দীর্ঘদিন থেকে জবর-দখল করে খেয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। জমিতে দু,ফসলা ধান হয় এবং বছরে এই জমি থেকে প্রায় সাড়ে ৪লক্ষ টাকার ধান বিক্রয় করে তারা। আর এই অর্থ দিয়ে তাদের মাটির বাড়ী ভেঙ্গে ইটের দু,তলা বাড়ী করা কাজে লেগেছে । যার কোন হিসাব-নিকাশ শিবকালী বিগ্রহ মন্দির পরিচালনা কমিটির কাহকেই দেয় না। শিবকালী বিগ্রহ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি শ্রী পরিতোষ কুমার সরকার সাধারণ সম্পাদক শ্রী স্বপন কুমার সরকার সহ স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত লোকজন অভিযোগ করে বলেন, দেবত্ব সম্পত্তিটি দেখাশুনার দায়ীত্বে ছিলো শ্রীমন্ত মন্ডল ও হরকান্ত মন্ডল। তারা বেঁচে থাকতে গ্রামের ও তার আশেপাশের সকল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের ডেকে শিবকালী বিগ্রহ মন্দিরের সকল পুঁজা-আর্চণা সহ সকল অনুষ্ঠান জাঁক-জোঁমক ভাবে পালন করতো। তারা মারা যাবার পর নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন হয়। কিন্তু শ্রীমন্ত মন্ডল ও হরকান্ত মন্ডলের এই ৩ছেলে মিলে শিবকালী বিগ্রহ মন্দিরের নামের ৩.০৪একর জমি সেই থেকে জবর-দখল করে আত্মসাৎ করে আসছে। মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সভাপতি,সাধারণ সম্পাদক সহ সকল সদস্যরা হিসাব চাইলে, হিসাব তো দেয় না, তারা তাদের খুন-জখমের হুমকি ধামকি দেয় বলে তারা জানান। পরিচালনা কমিটি অভিযোগ করে বলেন, শিবলিঙ্গের কিয়োদংশ এই ৩জন মিলে অর্থের বিনিময়ে বিক্রয়ও করেছে,এই মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের শত শত মানুষদের পুঁজা-আর্চনা করতে দেয় না। মন্দিরে পার্শে ঘর বানিয়ে সেটি সারের দোকান হিসেবে ভাড়া দিয়েও খাচ্ছে তারা। তারা মন্দিরটিও জবরদখল করে তালা মেরে রেখে দিয়েছে। তাদের কাছে মন্দির,মন্দিরের জমি কোনটাই, কোন ভাবেই নিরাপদ নয়, তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তির দাবী জানান স্থানীয়রা এবং সম্পত্তিটি সরকার বাহাদুরের আয়ত্বে রেখে প্রতিবছর ডাকের মাধ্যমে সর্বজনীন করার দাবী জানান। সাংবাদিকরা সরেজমিনে গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের এ সকল অভিযোগের সত্যতাও পেয়ে যায়। তারা বলেন, এ বিষয় নিয়ে বহুবার স্থানীয় ভাবে মিমাংসার জন্য ডেকে পাঠালেও তারা সেখানে উপস্থিত হয় না,উল্টো কোর্ট,কাচারীতে সবাইকে যেতে বলে। এ নিয়ে পরিচালনা কমিটি বাদী হয়ে নওগাঁ কোর্টে মামলা করেন।পরিচালনা কমিটির সকল বিষয়ে ইউএনও,এসিল্যান্ড,ও মন্ত্রী মহোদয় সুপারিশ থাকলেও কোন অদৃশ্য কারণে ঐ ৩ জন রায় নিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। এরপর পরিচালনা কমিটি আবারও আপিল করবে বলে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্রজেন্দ্রনাথ মন্ডল, বিষ্ণপদ মন্ডল ও গবিন্দ্র মন্ডলের বাড়ীতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এগুলো বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে,কোন কথার উত্তর দেওয়া যাবে না,এ বিষয়ে কোর্টে জবাব দেবো,এছাড়া কাউকে কোন কথা বলা যাবে না,আপনারা আসতে পারেন বলে জানায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, নওগাঁ কোর্টের ১জন অসাধু কর্মচারীকে হাত করে, অর্থের বিনিময়ে,এতবড় অপরাধ করেও তারা রক্ষা পেয়ে যায়, যার কোন প্রমান বা সাক্ষি কেহ দিতে চায় না।
এ বিষয়ে বাহাদুরপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মো. মামুনুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে এরপর থেকে এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেবেন বলে তিনি জানান।