ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই! এভাবেই নিজের সংগঠনকে নিয়ে এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী। তবে এই ছাত্রলীগ নেতার এমন কর্মকাণ্ড এই প্রথম নয়। এর আগেও তিনি তার বেশ কয়েকটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শিরোনাম হয়েছিলেন গণমাধ্যমে।
রোববার (১২ মে) বিকেলে উপজেলা টিঅ্যান্ডটি মোড় এলাকায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীর নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে এমন বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তিনি। তার এই মন্তব্য ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী দুই সন্তানের জনক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছেন। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তার নেতৃত্বে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ ও আসবাবপত্রের জন্য আহ্বান করা দরপত্রের বাক্স ভেঙে দরপত্রগুলো ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি একই বছরের ৩০ মে শরীয়তপুরে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় ৭২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে একত্রিত হয়ে আসামিদের মারধর করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সবশেষে তিনি গত রোববার জাজিরা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজীর পক্ষে নির্বাচনী সভায় ঘোড়া প্রতীকের আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এস এম আমিনুল ইসলাম রতন সরদারের বিপক্ষে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেওয়ার সময় ‘ছাত্রলীগকে বড় সন্ত্রাসী দল’ হিসেবে আখ্যা দেন।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে পারিনা। কেননা এই উপজেলা পরিষদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে সাধারণ মানুষের, নেতাকর্মীদের ও রাজনৈতিক সংগঠনের আস্থার জায়গা। আমরা সব সময় রাজনীতির নামে ব্যবসা করে নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করতে চাই। তাই সেইসব লোকের থেকে আগামী নির্বাচনে দূরে থাকতে হবে। ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এমনকি তার হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি তার কোনো উত্তর দেননি।
এ দিকে অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেদ উজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র আপনার মাধ্যমে শুনতে পেলাম। সে যদি এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’