ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক নারী চিকিৎসক নিজের শরীরে আগুন দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টার দিকে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
ওই চিকিৎসকের নাম অপর্ণা বসাক (৩০)। তিনি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রয়াত রতন বসাক ও জ্যোৎস্না বসাক দম্পতির মেয়ে। দুই মাস আগে ময়মনসিংহ নগরীর পণ্ডিতপাড়া এলাকার একটি বাড়ির নিচতলায় বাসা ভাড়া নেন তিনি। ওই বাসায় মা জ্যোৎস্না বসাককে নিয়ে থাকতেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসক অপর্ণা বসাক ময়মনসিংহ নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তিনি বগুড়া মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।
মা জ্যোৎস্না বসাকের বরাতে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, গতকাল সোমবার রাত ১০টার পর খাবার খেয়ে নিজের কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন অপর্ণা। মঙ্গলবার সকাল সাতটা থেকে আটটার মধ্যে অপর্ণার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে এক আত্মীয় অপর্ণার খোঁজ নিতে বলেন। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে ডাকাডাকি করলে সাড়া না পেয়ে স্থানীয় লোকজন দরজা ভেঙে আগুন নিভিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
জ্যোৎস্না বসাক আহাজারি করে বলেন, ‘ঘর থেকে পোড়া গন্ধ পেয়ে লোকজনকে ডাকি। কী কারণে মেয়ে এমন করল, বুঝতে পারছি না।’
মঙ্গলবার ভোরের দিকে অপর্ণা নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে লেখেন, ‘ভালো থাকো। আমি আর পারছি না। হয়তো সবার মতে হেরে গেলাম। মুক্তি দিয়ে গেলাম।’ স্ট্যাটাসটি একজন ব্যক্তিকে ট্যাগ করে দেওয়া হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ভোর চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই নারী চিকিৎসক। প্রাথমিক তদন্তে প্রেমের কারণে আত্মহত্যার করেছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে পরিবার প্রেমের বিষয় নিয়ে কিছু বলছে না। ফেসবুকের স্ট্যাটাসে যে ব্যক্তিকে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে, তাঁকে খুঁজতে পুলিশ কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে আইনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে সন্ধ্যায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।