কোরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ, আত্মোত্সর্গ; নৈকট্য লাভ এবং জবাই করা ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় কোরবানির অর্থ হলো, জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা।
এ প্রসঙ্গে কোরআনে এসেছে, ‘সকল সম্প্রদায়ের জন্য আমি কোরবানির বিধান দিয়েছি, তিনি (আল্লাহ) তাদের জীবন উপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছেন, সেগুলোর ওপর যেন তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ (সুরা হজ, আয়াত: ৩৪)।
ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কোরবানি করার বিধান
কোরবানির জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা জরুরি। কেউ যদি জিলহজের ১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত সময়ের মধ্যে যেকোনো সময় নিসাবের মালিক হন, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যাবে। বছর অতিক্রম হয়েছে কি না; তা দেখার প্রয়োজন নেই। (আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫০৬)
তবে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক যদি কোরবানির দিনগুলোতে সাময়িক ঋণগ্রস্ত হন, যা পরিশোধ করে দিলে তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি না থাকে তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে না। আর যদি ঋণ আদায় করে দেওয়ার পরও নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯২)
নেসাব হলো: স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি। আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি। আর অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের সম্পদ।
কারও কাছে যদি স্বর্ণ বা রুপা উভয়টি মিলে কিংবা এর সঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অন্য বস্তুর মূল্য মিলে সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপার সমমূল্যের হয়ে যায় তাহলেও তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রুপার অলঙ্কার, নগদ অর্থ, যে জমি বাৎসরিক খোরাকীর জন্য প্রয়োজন হয় না এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাবপত্র- এসব কিছুই কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য হবে।