শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
ভালোবেসে বিয়ের ছয়মাস পরেই দাম্পত্য কলহের জেরে ডিভোর্স হয়ে যায় মিম ও রাব্বির। এরপর সাবেক স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ের সংবাদ শুনে স্ত্রীর রেখে যাওয়া ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাব্বি।
সোমবার (৩ জুন) মধ্যরাতে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাঁও বটতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে পরিবারের সদস্যরা বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে রাব্বির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। মৃত রাব্বি মাদবর (২৪) ওই এলাকার মামুন মাদবরের ছেলে।
স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের শুরুতে একই গ্রামের মিম আক্তার ও রাব্বি ভালোবেসে বিয়ে করে। বিয়ের ৬ মাস পরই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দিলে বাবার বাড়ি চলে যায় মিম। বাবার বাড়ি গিয়ে মিম তার স্বামী রাব্বিকে তালাকনামা পাঠিয়ে দিলেও তাদের মধ্যে প্রায়ই যোগাযোগ হতো। গতকাল সোমবার দুপুরে মিম আক্তার রাব্বিকে খবর দেয় তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে। এমন খবর পাওয়ার পর থেকে রাব্বি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যে থাকা একটি পরিত্যক্ত ঘরের দরজা বন্ধ করে প্রাক্তন স্ত্রী মিম আক্তারের পুরোনো ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মঙ্গলবার সকালে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজ করতে গেলে ওই ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মৃত রাব্বির মা মমতাজ বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে মিমকে খুব ভালোবাসতো। গতকাল মিম মোবাইলে কল দিয়ে রাব্বিকে তার বিয়ের খবর বলে। এই খবর সহ্য করতে না পেরে সে মিমের পুরোনো ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমার ছেলে আর নেই, আমি এর বিচার চাই।
তালাকের পরে রাব্বির সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে মিম আক্তার বলেন, বিয়ের পর থেকে রাব্বি আমাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। আমার শরীরে এখনো অসংখ্য দাগ রয়েছে। যার কারণে বাধ্য হয়ে তাকে আমি তালাক দিয়েছি। তালাকের পর থেকে তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই। তার আত্মহত্যার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বিষয়টি নিয়ে নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় রাব্বির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।