Daily News BD Online

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বুড়িচংয়ে প্রতিদিন রান্না করে খাওয়াচ্ছেন ১০ হাজার মানুষ

 


মিজান চেয়ারম্যানের ২৭টি কেন্দ্র

সৌরভ মাহমুদ হারুন,ব্রাহ্মনপাড়া (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া গ্রাম সংলগ্ন গোমতীর বাঁধ ভাঙ্গনের ফলে সৃষ্ট ৫ টি ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লক্ষাধিক দুর্গত মানুষের দুর্দশা লাগবে সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ হাজী এ টি এম মিজানুর রহমান অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এসময় তিনি একাই নিজস্ব অর্থায়ন ও জনবল দিয়ে বন্যা কবলিত বুড়িচং উপজেলার ২৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষকে খাদ্য, চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে রান্না-বান্নার কাজে অর্ধশতাধিকের বেশী বাবুর্চি ও সহযোগীছাড়াও তার পক্ষে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী এসব আশ্রয় কেন্দ্রে স্বেচ্ছাশ্রমে দিন-রাত কাজ কওে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি আপন সহোদর ডাঃ নাজমুল হাসান সাঈদসহ একাধিক চিকিৎসকের সমন্বয়ে বেশ কিছু  মেডিকেল টিম গঠন করেছেন। তারা ৬ বা ৭ টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিটি দলে কমপক্ষে একজন করে চিকিৎসক নিয়ে প্রতিদিনই দুর্গতদের মাঝে চিকিৎসা সেবা দিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এছাড়াও পরিচিতিজনদেও মারফত দুর্গতদের খবর পেয়েও ছুটছেন চিকিৎসা সেবা দিতে। বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়ায় গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ গত ২২ আগষ্ট রাতে ধ্বসে গেলে নদীর পূর্ব-উত্তরের ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যায়। পরদিন ২৩ আগষ্ট থেকে মিজানুর রহমান দুর্গত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। প্রথম দিন শুকনো খাবার বিতরণ করলেও দুর্গত মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে হাজী মিজান পরদিন ২৪ আগষ্ট থেকে খাবারের তালিকায় দুপুর ও রাতে খিচুড়িসহ ভারী খাবার সরবরাহ শুরু করেন। এজন্য ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতে পৃথক বাবুর্চি ও সহযোগীসহ খাবার সরবরাহের জন্য কমপক্ষে ২’শতাধিক  স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে। এদিকে নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরেও তাদের মেডিকেল টিম কাজ করছে বলেও জানান মিজান চেয়ারম্যান। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে দুর্গতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সবাই শুকনো চিড়া,মুড়ি ,বিস্কুট দিলেও মিজান চেয়ারম্যান আশ্রিতদের জন্য বাবুর্চি এনে রান্না করছে। এতে দুর্গত আশ্রয় কেন্দ্রের  বয়স্ক ও শিশুদের অনেক সুবিধা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে চাইলে মানবতার এই ফেরিওয়ালা সমাজসেবক,রাজনীতিবিদ এটিএম হাজী মিজানুর রহমান এপ্রতিনিধিকে জানান, আমি আমার উপজেলার দুর্গতমানুষের সেবায় কোন স্বার্থের মোহে কাজ করছি না। আগে করোনাসহ বিভিন্ন সুখে দুখে ছিলাম এবারোও আছি। যতদিন আল্লাহ সামর্থ রাখেন ততদিন অসহায়, সাধারন মানুষের জন্য কাজ করে যাবো। তিনি আরো বলেন, আমার মেডিকেল টিম ৫/৬/৭ সদস্য বিশিষ্ট। প্রতিটি টিমে আলাদা চিকিৎসক রয়েছেন। যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানেই যাচ্ছে তারা,দিচ্ছেন ঔষধ,স্যালাইনসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এসময় তিনি আরো বলেন, বন্যা পরবর্তী দুর্গতদের পুনর্বাসন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।  তিনি প্রশাসন,এনজিও, রেডক্রিসেন্ট, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীমূলক প্রতিষ্ঠান , রাজনৈতিক দল,রেমিট্যান্স যোদ্ধাসহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবানসহ তাদের সবাইকে নিয়ে ওয়ার্ড পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের তালিকা তৈরী করে পুনর্বাসন কাজ এগিয়ে নিতে হবে।  তাহলেই মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে। তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে তার পরিচালনায় থাকা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোসহ দুর্গত বিভিন্ন এলাকাও সফর করছেন।  তার অর্থায়নে পরিচালিত আশ্রয় কেন্দ্রগুলো হচ্ছে,সোনার বাংলা কলেজ, ভরাসার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়,মহিষমারা উচ্চ বিদ্যালয়, বুড়িচং আনন্দ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,বুড়িচং কালিনারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বুড়িচং মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর জগতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জগতপুর মাদ্রাসা, পীরযাত্রাপুর উচ্চ বিদ্যালয়, পারুয়ারা আব্দুল মতিন খসরু কলেজ, বারেশ^র উচ্চ বিদ্যালয়, বিজয়পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,পুর্নমতী উচ্চ বিদ্যালয়, লরিবাগ উচ্চ বিদ্যালয়, পাঁচোড়া মাধ্যমিক বিদ্যানিকেতন,শঙ্কুচাইল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, ছয়গ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, কালিকাপুর আব্দুল মতিন খসরু কলেজ,বাকশীমুল উচ্চ বিদ্যালয়, ফকির বাজার স্কুল এন্ড কলেজ,সাদকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়,সাদকপুর ইসলামিয়া আলীম মাদ্রাসা,সাদকপুর কোরিয়ান স্কুল,পূর্ব সাদকপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রমূখ। উল্লেখ্য হাজী মিজান বুড়িচং উপজেলা বিএনপি’র বর্তমান সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন