আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর (সিলেট) থেকে:
ওসমানীনগরে ভুয়া রয়েলিটি দেখিয়ে ১৫ বছর ধরে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করার অভিযোগে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদানের খবর পাওয়া গেছে। গত ১৮ আগস্ট বালু উত্তোলন বন্ধ ও মাঠে স্টক করা বালু জব্দ করার জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগ দায়ের করেন, সৈয়দ হুমায়েল আহমদ, শাহ ইয়াহইয়া, শাহ এনায়েত আলী গং।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত ১৫ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু, জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদ্য সাবেক ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অরুনোদয় পাল ঝলক, সাদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা সাহেদ আহমদ মুসা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইমরান হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মুহিবুর রহমান, মনজুর আহমদ, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা রাসেল, ইমরান, মামুন, উতফল, বদরুল, শাহেল, আজহারুল হক মন্টু সহ অন্যান্যরা আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া রয়েলিটি দেখিয়ে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর অঞ্চল থেকে লক্ষ লক্ষ ফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে তাদের উত্তোলনকৃত বালু মাঠে রয়েছে। এর ফলে কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী সাদীপুর ইউনিয়নের শেরপুর অঞ্চলের গ্রামসহ, রাস্তা, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে ভারী যানবাহন দিয়ে পরিবহন করায় এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙ্গে খানাখন্দ এতে জনসাধারণের চলাচল দুর্ভোগ হচ্ছে।
লিখিত অভিযোগকারী সৈয়দ হুমায়েল আহমদ জানান, গেল দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এ চক্রটি কুশিয়ারা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করলেও স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের গুম খুনের ভয়ে কেউ মুখ খোলেনি। এ বিষয়ে আমরা এলাকাবাসী মিলে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
লিখিত অভিযোগকারী শাহ ইয়াহইয়া বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এলাকার রাস্তা ভাঙছে ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইমরান হোসেন বলেন, বালু উত্তোলনে মা এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের অনুমোদন আছে, সেখান থেকে আমরা বালু ক্রয় করে স্টক করে বিক্রি করি।
ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অরুনোদয় পাল ঝলক, সাদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেদ আহমদ মুসা মোবাইল ফোনে কল রিসিভ করেন নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু বলেন, বালু উত্তোলনে আমাদের বৈধ অনুমোদন রয়েছে । আমরা ওসমানীনগর থেকে কোনো বালু উত্তোলন করি না। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের কসবা এলাকার একটি চর থেকে বালু উত্তোলন করে সাদিপুরে নৌকা দিয়ে এনে মজুত করে বিক্রি করি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাশ বলেন, বিষয়টি আমরা দেখছি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) সুবর্ণা সরকার বলেন, বিষয়টি শুনলাম, এ বিষয়ে খোঁজ নেব।