খন্দকার ওবায়দুল্লাহ :
প্রকৃত দুর্যোগের সময়ে মানুষের সহানুভূতিই তাদের প্রকৃত শক্তি হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালে ফেনী, নোয়াখালি, লক্ষ্মীপুরের ভয়াবহ বন্যায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছিল, ঠিক তখনই এগিয়ে আসে নবপ্রভা ফাউন্ডেশন নামের এক ফাউন্ডেশন। তরুণদের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে ফাউন্ডেশনটির কার্যক্রম শুরু হয়। সহানুভূতি ও মানবিকতার প্রেরণায় তারা শুরু করে নবপ্রভা ফাউন্ডেনের ৯ দিনের মানবিক অভিযাত্রা। যার প্রথম পাঁচদিন ত্রাণ তহবিল সংগ্রহের কাজে এবং বাকি চার দিন ত্রাণ বিতরণের কাজ করা হয়।
খুব সামান্য সম্পদ নিয়ে ঢাকার জনাকীর্ণ রাস্তায় তাদের সহায়তার যাত্রা শুরু। তাদের সংগ্রহবাক্স ও একটিমাত্র লক্ষ্য নিয়ে তারা মানুষের সামনে দাঁড়ায়। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সংগ্রহ বুথ স্থাপন করা হয়। টাকা ও বস্ত্র সহায়তা আসতে থাকে। ছোট ছোট অবদানগুলোই একত্রে বড় কাজের রূপ দেয়। এভাবে পাঁচ দিন ত্রাণ সংগ্রহের পর, দলটি প্রস্তুত হয়ে লক্ষ্মীপুরের পথে যাত্রা করে।
রাজিবপুর এবং আদিলপুরে শুরু হয় ত্রাণ বিতরণ। ৩০০টি পরিবার পায় ছয় দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ। পর দিন দলটি স্থানীয় ছাত্র সংগঠন আদর্শ সমাদিয়ান-এর সঙ্গে মিলে হাজিরপাড়া গ্রামে পৌঁছে। এই গ্রামটি বন্যায় ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেখানে তারা ৫০ জন নারী-কে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধ প্রদান করে। তৃতীয় দিন তারা দত্তপাড়ায় যায় এবং ৬০টি পরিবার-কে ছয় দিনের জন্য খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ করে। শেষ দিনটি ছিল ঢাকায় সংগৃহীত বস্ত্র বিতরণের। লক্ষ্মীপুরের ১৩টি স্থানে গিয়ে তারা বস্ত্র পৌঁছে দেয়, এবং শুধুমাত্র প্রকৃত দরিদ্র ও প্রয়োজনমতো মানুষদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়। নবপ্রভা ফাউন্ডেশনের ৯ দিনের এই কার্যক্রমে ৪০০টিরও বেশি পরিবার সরাসরি উপকৃত হয়েছে। শুধু ত্রাণ দিয়ে থেমে যায়নি তারা, বন্যার পানি সরে যাওয়ার পরেও মানুষের দুর্দশা শেষ হয়নি। তাই নবপ্রভা ফাউন্ডেশন শুরু করছে একটি নতুন উদ্যোগ। পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় বন্যায় ঘরহারা ১০টি পরিবারকে নতুন করে বাসস্থান প্রদান করবে এই সংগঠন।