Daily News BD Online

সাতক্ষীরায় শুরু হয়েছে খেজুর গাছ থেকে রস গুড় সংগ্রহ

 


আব্দুল জলিল (সাতক্ষীরা) : দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরা । এই জেলায় শীতের শুরুতেই চলছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ। তবে উৎপাদন কম  ও দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা বেশি থাকায় দাম অনেক বেশি। যার কারণে  নিম্ন আয়ের লোকজন  খেজুরের রস গুড় খেতে পারছে না। কৃষি বিভাগ বলছে, শীত  কম, মজুরি ও জ্বালানি দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক সব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে না। সাধারণ মানুষ বলছে সরকার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সব  খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করলে দেশ মিষ্টির চাহিদা পূরণ হবে ও মানুষ আগের মত রস গুড় পিঠা পায়েশ খেতে পারবে।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রায় দেড় লাক্ষ খেজুর গাছ আছে। তার মধ্যে ৮০ হাজার খেজুর  গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হবে। এ বছর উৎপাদনের  লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ শত মেট্রিক টন। শীতের শুরুতেই শিবলীরা গাছ কেটে রস সংগ্রহ  শুরু করেছে। সাতক্ষীরা শহর ও গ্রামের বিভিন্ন মোড়ে খেজুরের রস, গুড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস ও মিষ্টি। এসব দোকানে ভীড় করছে নারী পুরুষসহ সব ধরনের মানুষ।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুর এলাকার নুরুল ইসলাম, শহিদুল, খোকন জানান, ঋতু চক্রের আবর্তে শীত আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারার সাথে মিশে আছে।  জেলায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে শিবলীরা । ইতিমধ্যে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ শুরু করেছে শিবলীরা।আর এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ  চলবে চৈত্র মাস পর্যন্ত। খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। খেজুরের গুঁড় ও মিষ্টি কেজি ৪শত থেকে ৫শত টাকা হওয়ায় গরীব মানুষ খেতে পারছে না।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আড়ূয়াখালী গ্রামের আফসার আলী, তলুই গাছা গ্রামের মোশারাফ হোসেন,বেলাল  জানান, শীত মৌসুম কম,  জ্বালানি, মজুরি দাম অনেক বেশি। তার কারণে গাছ মালিকরা এখন আর  আগের মত  রস সংগ্রহ করছে না। অনেক গাছ বছরের পর বছর তোলা বা কাটা হচ্ছে না । যার কারণে রস উৎপাদন কমে গেছে। আগের মত পাওয়া যাচ্ছে না খেজুরের রস ও গুড়। গ্রাম ও শহরের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস,গুড় আর  নতুন ধানের চাউলের পিঠা পায়েস নবান্ন উৎসব নেই বললেই চলে।
সাতক্ষীরা শহরের রাজারবাগান এলাকার আব্দুস সামাদ, আরিফুল, আজিজুল জানান,আগের মত এখন আর শীত মৌসুমে বাড়িতে বাড়িতে নবান্ন উৎসব দেখা যায় না। দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারছে না। জেলার যে পরিমাণ রস গুড়  উৎপাদন হয় তার চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি। এছাড়া সাতক্ষীরার খেজুরের পাটালি, রস চলে যাচ্ছে  দেশের বিভিন্ন জেলায়। এসব কারণে দাম অনেক বেশি। সরকারকে ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।তবে আগের মত ফিরে আসবে খেজুরের রসগুড়। এই রস ও গুড় দিয়ে তৈরি হবে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, পিঠা পায়েস।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান,  মজুরি বৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম বেশি হয় মানুষ এখন আর খেজুর গাছ কাটতে চায় না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে খেজুর গাছ কাটা শিবলি তৈরি করতে হবে। একই সাথে রাস্তার দুই ধারে খেজুর গাছ লাগিয়ে চাষ  বৃদ্ধি করা যেতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন