Daily News BD Online

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশা চালক ও অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ৭ জন নিহত


 

সৌরভ মাহমুদ হারুন, বুড়িচং (কুমিল্লা) :
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ও অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন ১২ বছরের শিশু সন্তান নিখোঁজ রয়েছে ।২৬ নভেম্বর  মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের  কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার  কালিকাপুর-বাকশীমূল রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বুড়িচং থানার ওসি মেঃ  আজিজুল হক।নিহত ব্যক্তিরা হলেন বুড়িচং উপজেলার বাকশিমূল গ্রামের মৃত. মনসুর আলীর  ছেলে আলী আহমদ,মৃত.তৈয়ব আলীর ছেলে( চালক) সাজু মিয়া(৪০),মৃত: আব্দুল মালেকের স্ত্রী লুৎফা বেগম(৬৫),মনিরের স্ত্রী ৮ মাসের গর্ভবতী  শাইনুর আক্তার সানু (২৬),আলী আশরাফের স্ত্রী সফর জান বেগম ও খোদাইধূলি গ্রামের মৃতঃ আছমত আলীর ছেলে রফেজ মিয়া(৫৫),মৃত: বজলু মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৬০),তার ১২ বছরের নাতী সাইফুল ইসলাম শুক্কুর নিখোঁজ রয়েছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে অটোরিকশা চালক সাজু মিয়া একজন মিস্ত্রি ছিলেন। তবে কয়েক বছর আগে কিস্তিতে টাকা উত্তোলনের পর তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। মঙ্গলবার সকালে বাকশীমূল চৌমুহনী থেকে ৮ জন যাত্রী নিয়ে কালিকাপুর যাওয়ার পথে রেলক্রসিংয়ে পৌঁছলে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে ঘটনাটি ঘটে।ওসি মোঃ আজিজুল হক জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকার রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় যাত্রীবাহী অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন নিহত হন। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও তিন যাত্রীর মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা আরো জানায়,এ ঘটনায় হোসনে আরা বেগম  এর সাথে থাকা ১২ বছরের নাতী সাইফুল ইসলাম শুক্কুর নিখোঁজ রয়েছে। হোসনে আরা বেগম মেয়ে ও জামাতা মারা যাওয়ার পর এক নাতীন ও এক নাতীকে খোদাইধূলি আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে লালন -পালন করে নাতীনকে আদর্শ সদরের মাঝিগাছা বিয়ে দেন। ওই দিন সকালে অটোরিকশা করে নাতী সাইফুল ইসলাম শুক্কুরকে সাথে নিয়ে নাতীনের বাড়িতে যাচ্ছিল এমন সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানী মারা যায়।উক্ত ট্রেনে কাটা পড়ে ও ধাক্কায় কয়েকজনের শরীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।ঘটনাস্থলে দেখা গেছে নিহত সফরজান বেগমের শরীরের ছিন্নবিচ্ছিন্ন অংশটুকু খোঁজেও বের করছেন তার মেয়ে।দুর্ঘটনাস্থলে রেলওয়ের কোনো বৈধ লেভেল ক্রসিং নেই বলে জানান লাকসাম রেলওয়ে থানার ওসি এমরান হোসেন। তিনি বলেন, ‘যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেই লেভেল ক্রসিংটি অবৈধ। ট্রেন আসার বিষয়টি বুঝতে না পেরে হঠাৎ রেললাইনে উঠে পড়েন অটোরিকশাচালক। এতে করে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। আমরা ঘটনাস্থলে একজনের মরদেহ পেয়েছি। বাকিদের মরদেহ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’এসময় সময় রেল কর্মকর্তারা রেল ক্রসিংটি অবৈধ ঘোষণা দিয়ে একটি ব্যানার লাগাতে গেলে স্থানীয়রা জনতা ও ছাত্ররা ওই রেল কর্মকর্তাকে সড়কে অবরোদ্ধ করে রাখে এবং রেলক্রসিংয়ে সিগন্যাল সহ নিরাপথে যাত্রী ও গাড়ী চলাচলের ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন ছাত্র-জনতা।ঘটনার স্থলে গিয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সাহিদা আক্তার ও সেনাবাহিনীর  একটি দল উক্ত ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন