নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জে বাবার খুনের আর নিজের ধর্ষণের বিচার না পেয়ে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় প্রধান আসামির রফিকুলের বিচার চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল করে তার বিচার চালানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল রফিকুলকে অব্যাহতি দেয়। সেই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে নিহত মেয়ের মার আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ নির্দেশ দেন।
গত ২০ অক্টোবর মেয়েটির আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, গত ৭ বছর আগে কেয়ামত ঘটে যাওয়া সেই ঘটনার চাপ সইতে না পেরে মেয়েটি আত্মহত্যা করছেন। ধর্ষণের মামলাটিতে যেনো অপরাধীদের বিচার হয় সেটি নিশ্চিত করতে হাইকোর্টে আবেদন করবেন বলেও তিনি সেদিন জানান।
মেয়েটিকে নিয়ে গত ৩০ মার্চ একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময় কিশোরী জানান, বাবার খুনের বিচার আর ভাইয়ের জীবন নষ্ট করার জন্যে মামলা করা হলে বাড়িতে এসে অনেক হুমকি-ধমকি দেয়া হয় মামলাটি তুলে নেয়ার জন্যে। মামলা উঠায় না নিলে নাকি তাদের বাড়ির যাকে পাবে তাকেই মারবে।
পরবর্তীতে সেই পরিবার মামলা উঠায় না নেয়ায় তারা কিশোরীকে তুলে নিয়ে একটি বাড়িতে ২০ থেকে ২৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। এই অপহরণ এবং ধর্ষণ মামলায় মোট ৪ জন আসামি। এই চারজনের মধ্যে একজন রফিকুল ইসলাম, যাকে নিম্ন আদালত অব্যাহতি দেন। এর বিরুদ্ধে সেই কিশোরী আপিল করেন।
বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরীর বেঞ্চ আপিল গ্রহণ করে। ধর্ষণ মামলা প্রমাণিত হলে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে বিচার দেখার আগের দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সেই কিশোরী।
এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সে সময় হাইকোর্ট জানতে চান, মামলার সব আলামত মেলার পরও কিভাবে চার্জ শুনানির সময় একজন ধর্ষককে অব্যাহতি দেয়া হয়? এরপর নারায়ণগঞ্জ আদালতের আদেশ বাতিল করে রফিকুলকে আসামি করার নির্দেশ দেয়া হয়। এই ধর্ষণ মামলাটি বর্তমানে ফের অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।
Tags
নারায়ণগঞ্জ