আব্দুল জলিল, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে হযরত আলী ক্লিনিকে ডাঃ তানিয়ার হাতে আবারো প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জনরোষ থেকে বাঁচতে ক্লিনিক মালিক ও নার্সসহ ওই চিকিৎসক ক্লিনিকের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ বাস টার্মিনাল সংলগ্ন ডাঃ হযরত আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ঘটনাটি ঘটে।
ক্লিনিক সুত্রে জানা যায়, প্রসব বেদনায় ক্লিনিকে ভর্তির ৩ ঘন্টার মধ্যে প্রসূতি সঙ্গীতা মন্ডল (২২)কে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। সঙ্গীতা মন্ডল কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের গোলখালী গ্রামের প্রসেনজিৎ মন্ডলের স্ত্রী।
নিহতের পরিবার সুত্রে জানা যায়, প্রসূতি সঙ্গীতা মন্ডলের প্রসব বেদনা শুরু হলে মোটা অংকের টাকার চুক্তিতে সম্মত হয়ে সোমবার বেলা ১২ টার দিকে বিতর্কিত হযরত আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর চুক্তিকৃত টাকা হাতে পেয়ে বিকাল সাড়ে ৩ টায় ডাঃ তানিয়াকে খবর দিলে তিনি এসে সিজারিয়ান অপারেশন করে বাচ্চা প্রসব করায়। ওই সময় বাচ্চা সুস্থ থাকলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সঙ্গীতার মৃত্যু হয়।
তাৎক্ষণিক প্রসূতির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনসহ স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ক্লিনিক ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এই সময়ে উত্তেজিত জনতা ক্লিনিকের উপর চড়াও হলে সুযোগ বুঝে পিছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে ডাঃ তানিয়া এবং ক্লিনিক মালিক সিরাজুল ইসলামসহ তার নার্সরা পাঁচিল টপকে পালিয়ে যায়।
পরে রোগীর পালস আছে এমন খবরে স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেলে নেয়ার কথা জানা যায়। আসলে প্রসূতি সঙ্গীতা মন্ডলের মৃত্যু হয়েছে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করেনি।
এদিকে, উপজেলার নলতা শেরে বাংলা ক্লিনিকের আংশিক মালিক ডাঃ তানিয়া সুলতানার ভুল চিকিৎসায় একের পর এক রোগীর মৃত্যুতে সচেতন মহলে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। এ পর্যন্ত উপজেলার নলতা, কালিগঞ্জ এবং দেবহাটা ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে এক ডজনেরও বেশি রোগী ডাঃ তানিয়ার হাতে মৃত্যু হয়েছে। এসব অভিযোগের পরেও সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জানার জন্য ক্লিনিক মালিক সিরাজুল ইসলাম পালিয়ে যাওয়ায় তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাছাড়া ডাঃ তানিয়া সুলতানার ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
কালিগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহিনুল ইসলাম জানান, এবিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম বলেন, ডাঃ তানিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ক্লিনিকের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।