ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগ যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেগুলোর বিচার শেষে দলটিকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার বিখ্যাত মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে চলে যাওয়া এবং সেখান থেকে তার কথা বলার বিষয়টি নিয়ে নিজের অভিমত জানিয়েছেন প্রফেসর ইউনূস। তিনি বলেছেন, “তাকে শুধু ভারত আশ্রয়ই দেয়নি। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো, তিনি সেখান থেকে কথা বলছেন। যা আমাদের জন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি করছে। তার কণ্ঠ শুনলেই মানুষ অখুশি হয়। অর্থাৎ এই বিষয়টি আমাদের বন্ধ করতে হবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের সম্পর্কের বিষয়টিও উঠে এসেছে টাইম ম্যাগাজিনের সাক্ষাৎকারে। এতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রফেসর ইউনূসের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে শেখ হাসিনার পতনের পরও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছে।
তবে টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস বলেছেন, তার বিশ্বাস ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে তিনি সহাবস্থান তৈরি করতে পারবেন।
“ট্রাম্প হলেন একজন ব্যবসায়ী। আমরাও একটি ব্যবসাতে আছি। আমরা তাদের বলছি না আমাদের অনুদান দিয়ে সহায়তা করে সমস্যা থেকে মুক্ত করুন। আমরা আসলে ব্যবসায়িক পার্টনার চাই।”
ড. ইউনূস বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে যেসব অর্থ পাচার হয়েছে সেগুলো তারা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। আর এক্ষত্রে ইউরোপিয়ান কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন তাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যেসব দেশকেই আমরা পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি, তারা আমাদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা এই বিষয়টি করেছিল।”
নির্বাচনের আগে সংস্কারের বিষয়টি অন্য যে কোনও কিছুর চেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ সেটি পুনর্ব্যক্ত করেছেন ড. ইউনূস। তবে এই সংস্কারের জন্য মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা দরকার। যদি জীবনমান উন্নয়ন না হয় তাহলে মানুষ ধৈর্য্যহারা হয়ে যেতে পারেন; এমনকি বলতে পারেন আওয়ামী লীগের সময়ই ভালো ছিল।
এ বিষয়টি ড. ইউনূসের বেশ ভালো করেই জানা রয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন বলে জানান তিনি। প্রফেসর ইউনূস বলেছেন, “এই পুরো অভ্যুত্থানের মূল হলো সংস্কার। এ কারণেই আমরা এটিকে বলছি বাংলাদেশ ২.০।”