সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবনা তুলে ধরছে জাতীয় পার্টি। পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সংবিধান সংস্কার বিষয়ক প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বনানী চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবিধান সংস্কার বিষয়ক জাতীয় পার্টির প্রস্তাবনা উপস্থাপনায় পার্টির মহাসচিব সহ প্রেসিডিয়াম সদস্যরা উপস্থিত আছেন।
প্রস্তাবনায় উপস্থাপনায় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা হল ওয়েস্টমিনিস্টার ধরনের সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনায় সংসদ প্রধান ভূমিকা পালন করে। রাষ্ট্রের সমস্ত সিদ্ধান্ত জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবেচনার পরে, সংসদের মাধ্যমে নেওয়া হয়। সরকারের যে কোন কার্যক্রমের জন্য সংসদের কাছে জবাবদিহিতা করার ব্যবস্থা থাকে।
সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে এটি করা হয়েছে (অনুচ্ছেদ-৭০)। এই বিধানটি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত দলীয় সংসদ সদস্যদের (যারা সংসদ সদস্য বা এমপি নামে পরিচিত), সংসদে ভোটদানের সময় দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বা যাকে সংসদের ভাষায় দলীয় হুইপিং বলা হয় তার বাইরে ভোট দানের অধিকার দেয় না। এটি প্রধানমন্ত্রীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় দলের সংসদ সদস্যদের সমর্থন নিশ্চিত করে। সংসদে সংসদ সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সরকার গঠিত হয়।
এছাড়া সংসদের সকল সিদ্ধান্ত সাধারণত সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়। শুধুমাত্র সংবিধানের সংশোধনী যার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। সুতরাং, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রধানমন্ত্রীকে একতরফাভাবে যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের এবং সংসদে তা পাস করানোর ক্ষমতা দেয়।
সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী যদি দুজন ভিন্ন ব্যক্তি হতেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংসদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা হলেও ভারসাম্য থাকতে পারত। ঐতিহ্যগতভাবে, এটি কখনও ঘটেনি। এখন পর্যন্ত, যখনই সুযোগ আসে, দলীয় প্রধানই প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন।
সেই প্রেক্ষাপটে, সংবিধান সংস্কারের জন্য প্রথম সুপারিশ হলো, সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি না হওয়া ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজিত করা- বলে উল্লেখ করা হয় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে।