Daily News BD Online

বিএনপির দুই নেতাকে পানিতে চুবাল গ্রামবাসী

 


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ বন্দরে কৃষি জমির সেচ প্রকল্পে চাঁদাবাজি করার সময় দুই ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতিকে পানিতে চুবিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রবিবার (১ ডিসেম্বর) পিচকামতাল এলাকার জহিদ্দার বিলে এই ঘটনা ঘটে।

এ সময় চাঁদাবাজদের হামলায় এক মহিলা মেম্বারসহ পাঁচজন রক্তাক্ত হয়েছেন। গণপিটুনির শিকার দুই বিএনপি নেতারা হলেন মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার।


স্থানীয়রা জানায়, বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাজুরবাগ এলাকার আমান উল্লাহ দীর্ঘ দিন ধরে জহিদ্দার বিলে ইরি ধান জমিতে পানি সেচ করছেন। এরই মধ্যে বালিগাঁও এলাকার হযরত আলী মিয়ার ছেলে যুবদল নেতা পরিচয় দানকারী পাপ্পু ও পিচকামতাল এলাকার মৃত সায়েদ আলী মিয়ার ছেলে তারা মিয়াসহ ১০-১২ জন আমান উল্লাহর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।

রবিবার চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পাপ্পু, তারা মিয়া, ফারুক, খালেক ও আব্দু রহিম, হযরত আলী, ইউসুফ ও জাহিদ খন্দকারসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমান উল্লাহর ওপর হামলা করেন।

এ সময় আমান উল্লাহ প্রাণ রক্ষার্থে ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে।


তখন তাদের ওপর হামলা চালায় তারা। এ হামলায় এক মহিলা মেম্বারসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। আহতরা হলেন সেচ প্রকল্পের মালিক আমান উল্লাহ (৪০) ও তার স্ত্রী মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার লাভলী বেগম (৩৬) ছেলে সোহান (২১), আহাদ আলী (৫৫) ও ছেলে বাহাউদ্দীন (৩৫)।
লাভলী বেগম বলেন, বিগত দিনে তুফানে সেচ প্রকল্প এলাকায় খুঁটি ভেঙে গিয়েছিল।


সেটা ঠিক করতে ব্যবস্থা নেন আমান উল্লাহ। এর মধ্যে তারা এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি এই এলাকার মেম্বার। আমি সেখানে গিয়েছি। তারা আমাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তাদেরকে প্রতিরোধ করেছে। তারা মিয়া, ফারুক, পাপ্পুকে পানিতে চুবিয়েছে তারা।
তারা মিয়া জানান, আমান উল্লাহর সেচ কাজে বাধা দেয় গ্রামবাসী। এতে গ্রামবাসীকে সমর্থন জানিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় তারা মিয়া ও জাহিদ খন্দকার। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।

তিনি আরো বলেন, 'প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে এই এলাকার নদীর তীরের মাটি কেটে বিক্রি করে আমান উল্লাহ গং। এবার যাতে সেটি না পারে সেই জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুলিশ নিয়ে বাধা দেই। তখন আমান উল্লাহর সহযোগী মুছাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বাহাউদ্দিন পুলিশের সামনেই আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। ওই সময় আমি পাশের জলাশয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ রক্ষা করি।'

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, জহিদ্দার বিলে স্থানীয় মুছাপুর ইউনিয়নের বাজুরবাগ এলাকার আমান উল্লাহ শীতলক্ষ্যা নদী থেকে পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে ইরি প্রকল্পে পানি সরবরাহ করেন। এতে পাম্পের পানি যে স্থানে পড়ে সেখানে একটি গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে করে নদীর তীরবর্তী জমিগুলোতে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। বিষয়টি গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে পুলিশকে আগেই জানানো হয়েছিল। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন