মাসুদ রানা, সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি :
আশুলিয়া ধান সোনা ইউনিয়নের পবনারটেক গ্রামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে নয়ন মিয়া (২২) এর ঘরে গোঙ্গানী শব্দ পেয়ে তার বড় ভাই সাগর ও তার বাবা জাহাঙ্গীর ভান্ডারী তাকে তৎক্ষনাৎ চিকিৎসার জন্য স্থানীয় নারী ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান তারা। মৃত ব্যক্তির নাম নয়ন মিয়া অত্র এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা তার বাবার নাম জাহাঙ্গীর ভান্ডারী, তার দুই ভাই, তার বড় ভাইয়ের নাম সাগর ও তার নাম নয়ন মিয়া , সে অত্র এলাকায় অটো গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো, তার স্ত্রীর নাম তামান্ন ও ৪ বছবরের ছেলের নাম তাহহিদ । তার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আজ সকালে তার বাসায় গেলে সাংবাদিকের সাথে ও সৌজন্যমূলক আচরণ করে তার পরিবারের লোকজন এ সময় তারা মৃত লাশের ছবি তুলতে বাধা দেয় তারা । মৃত নয়নের বাবা জাহাঙ্গীর ভান্ডারি ও তার পরিবার দ্রুত লাশের গোসল সম্পন্ন করে তাকে কবরস্থ করার চেষ্ঠা চালায়। পরে মৃত নয়নের স্ত্রী বিষটি আশুলিয়া থানায় অবহিত করে তার স্বামি কে হত্যা করা হয়েছে বলে জানালে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে মৃত নয়ন মিয়ার স্ত্রী তামান্না এই প্রতিবেদক কে জানান, তার শশুর জাহাঙ্গীর ভান্ডারীর চরিত্র ভালো নয় সে প্রায় সময় আমার গায়ে ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতো আমি তাকে কিছু বললে সে আমাকে ভয়ভীতি দেখাতো এবং মারতে চাইতো। গত ২৭ শে নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত অনুমানিক ১২টার দিকে আমাদের বাসায় কেউ না থাকার সুবাদে আমার শশুর জাহাঙ্গীর ভান্ডারী আমার ঘরে প্রবেশ করে জোর পর্বক আমাকে ধর্ষণ করে। এবং এ ঘটনা কাউকে বললে আমাকে জানে মারার হুমকি দেয়। আমার ব্যবহারিত মোবাইল ফোন সিম নিয়ে যায় আমি যাতে কাউকে না জানতে পারি। আমার বাসার বাইরে ছিলো কয়েক দিন সে বাসায আসলে বিষয়টি আমি আমার স্বামি নয়ন মিয়া কে জানাই, সে স্থানীয় কয়েকজন কে জানিয়েছে তাদের কাছে বিষয়টির কোন সমাধান না হওয়ায় গত কয়েকদিন আগে আমাকে ও আমার বাচ্চা কে টাঙ্গাইলের নাগরপুর থানার পাকুটিয়ায় আমার বাবার বাড়িতে রেখে আসে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে আমার নানির মোবাইলে কল দিয়ে তারা আমার স্বামী নয়ন মিয়ার মৃত্যুর সংবাদ জানায়, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হবার আগেই তারা তড়িঘড়ি করে এবং আমি ও আমার সন্তান কে না দেখিয়েই দাফন সম্পন্ন করার চেষ্টা চালায়। পরে আমি বিষয়টি আশুলিয়া থানায় অবহিত করে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। গৃহবধূ তামান্না আরো বলেন আমার স্বামি কোন ভাবেই মরতে পারে না তাকে হত্যা করা হয়েছে সে পুরোপুরি সুস্থ সবল একজন মানুষ ছিলো।
আমার ভাসুর ও শশুর তাকে হত্যা করেছে। গৃহবধূ তামান্নাকে ধর্ষণের ব্যাপারে তার শশুর জাহাঙ্গীর ভান্ডারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষটি অস্বীকার করেন এবং কিভাবে তার ছেলে নয়ন মিয়া মারা গেল জানতে চাইলে তিনি বলেন হার্টস্ট্রোক করেছে আমরা হাসপাতালে নিয়ে যাবার পর ডাক্তার বলেছে মারা গেছে।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীর ভান্ডারীর বাড়ির আশে পাশের বেশ কয়েকজন জন প্রতিবেশীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, তার পুত্রবধু নয়ন মিয়ার স্ত্রীর তামান্না ধর্ষণের বিষয়টি তারাও শুনেছেন তারা বিষয়টি জানেন এবং তাদের ধারণা মৃত নয়ন মিয়া তার স্ত্রীকে তার বাবা ধর্ষণ করেছে এই বলে লোকজনের কাছে বিচার চাইছে তাতে জাহাঙ্গীর ভান্ডারীর সম্মান হানি হচ্ছে তাই তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যপারে আশুলিয়া থানার এস আই আতিকুর রহমান জানান, একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু তা জানা যাবে, যেহুতু মুত্যুর ব্যাপারটি অস্বাভাবিক তাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অন্যদিকে গৃহবধূ তামান্নার ধর্ষণের ব্যাপারে জানতে চাইলে এস আই আতিকুর রহমান জানান এ বিষয়ে ভিকটিম তামান্না কোন মামলা বা অভিযোগ এখনো দায়ের করেননি করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।