দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি :
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জের বকুলতলা রুটের ভাঙা রাস্তার দুর্দশায় বিপর্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দা ও যানবাহন চালকেরা। প্রতিদিনই এই রাস্তায় দুর্ঘটনা ও অসুবিধার শিকার হচ্ছেন অনেকেই।
ধনেশচন্দ্র রায়, একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী, বলেন, "আমার সামনেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় একজনের পা ভেঙে যেতে দেখেছি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে।"
আবদুল খালেক নামে যাত্রীবাহী বাসের এক চালক জানান, গত এক বছর ধরে এই রাস্তায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, "যাত্রীরা এখন বাসে উঠতে চান না। ভাঙা রাস্তায় ঝাঁকুনির কারণে অনেকেই বমি করে ফেলেন। প্রতিদিনই বাসের কোনো না কোনো যন্ত্রাংশ বিকল হচ্ছে।" এমনকি ভবিষ্যতে এই রাস্তায় স্বাভাবিক চলাচলের সম্ভাবনাও তিনি অনিশ্চিত বলে মনে করেন।
বকুলতলা রুটে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালান আব্দুল মোমিন। তিনি জানান, প্রতিদিন যন্ত্রাংশ মেরামতের পেছনে আয়ের বড় অংশই খরচ হয়ে যায়। তার ভাষায়, "এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা খুব কষ্টকর। প্রচুর বালু ওড়ে। বাজার অংশের কথা তো বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিন ইজিবাইক বিকল হয়, কোনো না কোনো যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। ২০ টাকা আয় করলে ১৫ টাকা মেরামত করতেই শেষ হয়ে যায়।"
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আমানুল্লাহ আমান জানান, রাস্তা সংস্কার ও সেতু নির্মাণের দায়িত্ব কুমিল্লার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাসুদ হাইটেক্সকে দেওয়া হয়েছে। চারটি প্যাকেজের জন্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
এর মধ্যে দিনাজপুর থেকে সেতাবগঞ্জের বকুলতলা অংশের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩৬ কোটি টাকা। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকৌশলী আমান বলেন, "চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরও এক বছর সময় বাড়ানোর অনুরোধ করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।"
এই রাস্তার উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন না হলে জনজীবনের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে। প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং প্রকল্পের যথাসময়ে সমাপ্তি স্থানীয় মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Tags
দিনাজপুর