নিজস্ব প্রতিবেদক : কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে মেলে ২৯ বস্তা টাকা। টাকার বস্তার পাশাপাশি মেলে প্রায় এক বস্তা চিঠিও। এসব চিঠিতে নানা মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার আকুতি জানান দানকারীরা। এসব চিঠির বিষয়বস্তু এখন আলোচনার কেন্দ্র।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স তিন মাস ১৪ দিন পর খোলা হয়। এরপর দিনব্যাপী গণনার পর দানবাক্স থেকে পাওয়া যায় রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
চিঠির মধ্যে যা লেখা ছিল:
হে আল্লাহ তায়ালা আমি যেন আমার প্রিয় মানুষটারে নিজের করে পাই, আল্লাহ আমার আর আলামিনের জোড়া টা মাবুদ এক করে দিও আলামিন+তামান্না মাবুদ আমার প্রিয় মানুষটা যেন খুব তাড়াতাড়ি দেশে আসে আমাদের এক করে দাও।
আব্দুস সামাদ নামের এক যুবকের দেয়া চিঠিতে যা লিখা ছিলো তা হুবাহু তুলে ধরা হলো:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
প্রিয়, খাদিজা আক্তার লিপি, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে তোমার নামে একটা মানত করেছিলাম তা পূর্ণ করলাম তুমি নেই তো কি হয়েছে তোমার দেয়া স্মৃতি নিয়ে বাঁচবো আজীবন।
আমার কি দোষ ছিল? তোমার একটা হিন্দু ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরও আমাকে এভাবে নষ্ট করলে, আমি তোমাকে অভিশাপ দিব না তোমাদের হবিগঞ্জ শহরে আমি অনেক মেয়ে দেখেছি কিন্তু তোমার মত কাউকে পেলাম না। আমি আসা রাখি তুমি একসময় আমার হবে।
যদিও তুমি বাচ্চার মা হও, তবুও আমার আফসোস থাকবে না।
ইতি তোমার আব্দুস সামাদ
প্রেমিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে এক নারীর খোলা চিঠি:
আমি তোমার পরে আমার মা-বাবা, তারপরে আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি তো সবকিছুই জানো। আমি আমার প্রতিটি মোনাজাতে শুধু তাকেই চাই। আল্লাহ সে যদি আমার জন্য কল্যাণকর না হয়, তাহলে তুমি তার ভিতর কল্যাণ দান করো- আর আমার করে দিও।
আল্লাহ তোমার কাছে আমার একটাই চাওয়া তুমি আমার প্রিয় মানুষটাকে আমার করে দিও।
আমি ও পাতিবাবু সারাজীবন একসাথে থাকতে চাই। আমাদের মধ্যে যেন কোনো শাঁকচুন্নি না আসে। জান্নাতেও যেন আমার পাতিবাবু কোনো হুর না পায়!
চিঠি খুলতেই দেখা যায় এতে লেখা রয়েছে, আল্লাহ তুমি আমাকে সারাজীবনের জন্য চিকন বানাইয়া দাও দয়া করে। আমি ও পাতিবাবু সারাজীবন একসাথে থাকতে চাই। আমাদের দুজনকে একসাথে রাইখো। তার আগে আমার মৃত্যু দিও। আমাদের মধ্যে যেন কোনো শাঁকচুন্নি না আসে। জান্নাতেও যেন আমার পাতিবাবু কোনো হুর না পায়। আল্লাহ তুমি ঠাকুমার ঝুলি কার্টুনে যে রকম পুকুর ছিল সেরকম জাদুর পুকুরের সন্ধান দাও। যাতে আমি ওই পুকুরে ডুব দিয়ে সুন্দর হতে পারি। মুখের দাগগুলো যায়, চুল বড় আর ঘন হয়, আর যাতে কমবয়স্ক লাগে সারাজীবন।
চিঠিতে আরও লেখা রয়েছে, আল্লাহ আমাদের সবাইকে বড় হজ করার ব্যবস্থা কইরা দিও। আমি আর আমার পাতিবাবু যাতে দুইবার অন্তত বড় হজ করতে পারি। আমি একটু সুন্দর হলেই কেউ না কেউ নজর দিয়ে দেয়। আল্লাহ এরকম যাতে আর না হয় দেইখো। আমি আর আমার পাতিবাবুকে সরকারি জব পাওয়াইয়া দিও। হালালভাবে যাতে চলতে পারি আমরা। আমার পাতিবাবুকে কয়েকদিনের ভিতরে সুস্থ কইরা দাও। আল্লাহ ডাক্তার বলছে ওর একটা মেডিসিন সারা বছর খাওয়া লাগবে। ওর যাতে সারাবছর খাওয়া না লাগে সে যাতে একবারে সুস্থ হয়ে যায় আল্লাহ তুমি দয়া কইরা দেইখো।
মনের মানুষকে কাছে পাওয়ার অসমাপ্ত কাহিনি লেখা অন্য আরেকটি চিঠি পাওয়া যায়। এতে লেখা রয়েছে, প্রিয় খাদিজা আক্তার লিপি, আজ এই ঐতিহাসিক মসজিদে তোমার নামে একটা মানত পূর্ণ করলাম। তুমি নেই তো কী হয়েছে তোমার দেওয়া স্মৃতি নিয়ে বাঁচবো আজীবন। আমার কী দোষ ছিল? তুমি একটি ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখার পরও আমাকে নষ্ট করলে। আমি তোমাকে অভিশাপ দিব না। আমি আশা রাখি তুমি একসময় আমার হবে যদিও তুমি বাচ্চার মা হও আমার কোনো আফসোস থাকবে না।
সৌদিয়ানকে বিয়ে করতে চিঠি দিয়েছেন এক নারী। তাতে লেখা রয়েছে, আমি একজন সৌদিয়ানকে ভালোবাসি। হে মহান আল্লাহ, তুমি তাকে আমার করে দাও। আমি যেন তাকে বিবাহ করতে পারি (সুম্মা আমিন)।