বিশেষ প্রতিবেদক : লাদেশ ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (আইসিবি) সরকারের কাছ থেকে সবেমাত্র ৩০০০ কোটি টাকা লোন পেয়েছে। এর মধ্যেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পুঁজিবাজারের মাফিয়াচক্র উঠে পড়ে লেগেছে।
মাফিয়াচক্রদের বস্তা পচা শেয়ার আইসিবিকে কেনার জন্য বিভিন্ন উপায়ে হুমকি দিচ্ছে আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে। একথা বলে হুমকি দিচ্ছে বর্তমান ডি জি এফ আই এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের এই বস্তা পচা শেয়ারে ইনভেস্ট করেছে তাই এসব শেয়ার উচ্চমূল্য দিয়ে কিনে নিতে হবে। যদি এই শেয়ার না কিনলে তার পদ থেকে অপসারণ করে দিবে।
গত ২১ নভেম্বর পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর পক্ষ থেকে দুদকে এই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পুঁজিবাজারের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করে আসার পরও এই মাফিয়াচক্র আরও ভয়ানক রুপে বর্তমান সরকারকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এই মাফিয়াচক্রের প্রধান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক বনে গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সকল মেম্বাররা জানে তিনি বিগত সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির আপন খালাতো ভাই এবং ডা. দীপু মনির সকল অবৈধভাবে উপার্জিত টাকার ক্যাশিয়ার ছিলেন এবং পুঁজিবাজারে ১৩০ টা বস্তা পচা কোম্পানি বাজার আনার আসল নায়ক। তাকে কিভাবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মেম্বাররা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক হিসেবে গ্রহণ করেছেন তা বোধগম্য হচ্ছে না, তাহলে কি এই মাফিয়াচক্র সরকারের থেকেও বড়।
তাদের আরেক ক্ষমতাধর মারকেটের মাস্টারমাইন্ড প্লেয়ার রাজীব আল মামুন (ইউনাইটেড সিকুউরিটিজ লি. এর পরিচালক) সরাসরি আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডি জি এফ আইয়ের হুমকি দিয়ে বলেছে লাভেলো কোম্পানির শেয়ার কিনতে হবে, না হলে সে ওই চেয়ারে বসতে পারবে না। আগামী বছর আইসিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের চাকরির মেয়াদ শেষ প্রয়োজনে তার চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে দেয়া হবে, যদি লাভেলো কোম্পানির শেয়ার কিনে নেয়। এমন অবস্থায় আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপাকে পড়েছে।
নিশ্চিত বাজে এবং দেউলিয়া কোম্পানির শেয়ার জানা পরেও তিনি আইসিবির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় কমিটির কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করতে বলেছেন, আইসিবির রিসার্চ টিম এবং ক্রয়-বিক্রয় কমিটি লাভেলো কোম্পানির শেয়ারকে ঝুঁকিপূর্ণ ইনভেস্টমেন্ট বলে মতামত দিয়েছে। এরপর থেকেই এই মাফিয়াচক্র উদ্দেশ্য হাসিল করতে আইসিবির ওপর তাদের সব মহল থেকে বল প্রয়োগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মাফিয়াচক্রের সাথে জড়িত বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে জড়িত বাংলাদেশ সিকুউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কিছু অসাধু কমকর্তা এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, খাইরুল বাশার আবু তাহের (চিফ রেগুলেটরি অফিসার), মোহাম্মদ বজলুর রহমান (সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মনিটরিং), মোহাম্মদ ইকরাম হোসেন (ম্যানেজার মনিটরিং), মোহাম্মদ জাকির হোসেন (সিনিয়র এক্সকিউটিভ), মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কমন সারভিস), ফাহমিদা খাতুন (ম্যানেজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ) বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে জিম্মি করে চুষে চুষে টাকা নিয়ে যাচ্ছে।
লাভেলো কোম্পানির শেয়ার যদি বর্তমান বাজার দর ৮৭.৫০ টাকায় ৩ কোটি শেয়ার আইসিবিকে গছিয়ে দিতে পারে তাহলে ২০% নগদ কমিশন মানে ৫২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বুঝে পাবে এই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মাফিয়া চক্র দল।
সরকার আইসিবিকে ৩০০০ কোটি টাকা ধার দিয়েছে কি এই বস্তা পচা শেয়ার কেনার জন্য নাকি পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক লেনদেনে ফিরিয়ে আনার জন্য। সরকার কি ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য কাজ করবে নাকি এই মাফিয়াদের কাছে বিক্রি হয়ে যাবে।