Daily News BD Online

ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে টাকা নেয়ার অভিযোগ ইউনিক নার্সিং এর বিরুদ্ধে


নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডের ইউনিক নার্সিং কলেজে বৃহস্পতিবার থেকে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্সের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বেসরকারি তিনটি নার্সিং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩০২ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার কেন্দ্র ইউনিক নার্সিং কলেজ। এই পরীক্ষায় ইউনিক নার্সিং কলেজের ১৮৮ শিক্ষার্থীও পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে কেন্দ্র ফি বাবদ ৩ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডের ইউনিক নার্সিং কলেজে ল্যাব না থাকলেও নেয়া হয় ফি, একই খাতে বছরে একাধিকবার দিতে হয় অর্থ। এমনকি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচালনার নামে অনৈতিকভাবে জনপ্রতি কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।


গোপনীয়তার সঙ্গে এই কাজ পরিচালনার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দায়িত্বও দিয়েছে মালিকপক্ষ। ওই শিক্ষার্থীরা ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে জনপ্রতি ৩ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এসব নিয়ে একে অন্যের মধ্যে কথোপকথনের প্রমাণও রয়েছে। গত বছরও এই কেন্দ্র পরিচালনার নামে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়া হয়।

ডায়াবেটিক সমিতি নার্সিং ইনস্টিটিউট নারায়ণগঞ্জের ৩৯ জন এবং এনএনএইচ নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৭৫ শিক্ষার্থীসহ ইউনিক নার্সিং কলেজ কেন্দ্রে ৩০২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।

জানা গেছে, কেন্দ্র ফির নামে এই অনিয়মের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলে একটি আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়। রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, প্রতি বছর পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচালনার নামে কোর্স ফির সঙ্গে ৫ হাজার টাকা প্লেসমেন্ট ফি দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতি বছর পরীক্ষার আগে ফের প্লেসমেন্ট ফি হিসেবে দেড় থেকে ২ হাজার টাকা ও ইন্টার্ন ফি হিসেবে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

এ ছাড়া কলেজে ল্যাব না থাকা সত্ত্বেও ল্যাব ফি এবং ভাইভা বাবদ আরো ৩ হাজার টাকা করে দিতে হয় কলেজ কর্তৃপক্ষকে। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার কেন্দ্র অন্যত্র চলে গেলে পরীক্ষার্থীরা ফেল করতে পারে বলে ভয় দেখায়। এসব অনিয়ম আর কেন্দ্র ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার কেন্দ্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছে। এই আবেদনপত্রের পরো কাউন্সিল কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কলেজের ২০১৯-২০ সেশনের সাবেক এক শিক্ষার্থী বলেন, ইউনিক নার্সিং কলেজে পড়াশোনা করা মানে আপনি হিডেন চার্জ (অপ্রকাশ্য ব্যয়) পরিশোধ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন। এখানে অনিয়মই যেন নিয়ম। ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে নানা ফি আদায় করে নেবে। এসব কাজে সব সময় প্রতিটি ব্যাচের কয়েকজন জড়িতও থাকবে। যারা কলেজ প্রশাসনের হয়ে কাজ করবে।

বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল জানিয়েছে, কেন্দ্র পরিচালনার জন্য কাউন্সিলে কলেজ থেকে কোনো অর্থ নেয়া হয় না।

তবু কেন এই অর্থ আদায় করা হচ্ছে; বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউনিক নার্সিং কলেজের পরিচালক (ফাইন্যান্স) রবিউল ইসলাম বলেন, পরীক্ষাকেন্দ্র ফির নামে কোনো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় না। আমাদের কলেজে কোনো হিডেন চার্জ নেই। এসব মিথ্যা অভিযোগ। এই প্রতিবেদকের কাছে কেন্দ্র ফি আদায়ের বিভিন্ন কথোপকথনের প্রমাণ রয়েছে জানানো হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য কেউ কেউ মিথ্যাচার করছেন। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই কলেজ পরিচালনা করি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন