ফরহাদ খান, নড়াইল
নড়াইলে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় গতকাল দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। চিত্রা রিসোর্টে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, চিকিৎসক, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন-স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাক্তার মনজুরুল মুরশিদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন-জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান, পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর, ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার সাজেদা বেগম পলিন, ইউনিসেফের খুলনা বিভাগীয় প্রধান কাউসার হোসাইন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাক্তার বদরুল হাসান, নড়াইল জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আব্দুল গাফফার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুলনার সহকারী পরিচালক (রোগনিয়ন্ত্রণ) ডাক্তার অপর্ণা বিশ্বাস, জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলিফ নূর, নড়াইল সদরের ইউএনও সঞ্চিতা বিশ্বাস, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা্ ডাক্তার সুব্রত কুমার, লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা্ ডাক্তার আবুল হাসনাত পিন্টু, কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা্ ডাক্তার আব্দুর রশিদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন নড়াইলের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান, জেলা হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আলিমুজ্জামান সেতু, ডাক্তার শুভাশিস বিশ্বাস, গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি আলমগীর সিদ্দিকী, ব্র্যাকের জেলা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম, স্কুলশিক্ষার্থী রূপম ভৌমিকসহ অনেকে।
বক্তারা, বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য বিষয়ে যথোপযুক্ত সংবেদনশীল মনোভাব সৃষ্টি ও প্রসারের লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানান। কর্মশালায় বাল্যবিয়ে প্রবণ নড়াইলের কিশোর-কিশোরীদের মাঝে বয়ঃসন্ধিকালের প্রতিকূল সময়টাতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের তৎকালীন সিভিল সার্জন সাজেদা বেগম পলিনের উদ্যোগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে ‘কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্ণার’ উদ্বোধন করা হয়। এ কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে বসেই চিকিৎসা, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন কিশোর-কিশোরীসহ উপকারভোগীরা। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব মতে ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত সময়টা কৈশোরকাল। এ বয়সে হরমোন পরিবর্তন হয়। এ কারণে কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়। ওজন ও উচ্চতা বাড়ে, হাড়ের গঠন হয়, পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন হয়। এ সময়টা সঠিক ভাবে সামলে নিতে পারলে ভবিষ্যত উন্নত হয়। এ লক্ষ্যে নড়াইলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে এগিয়ে চলেছে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা কার্যক্রম। এতে উপকৃত হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ ঝরেপড়া কিশোর-কিশোরীরা।
এ কার্যক্রমের মাধ্যমে সিভিল সার্জনসহ চিকিৎসকগণ প্রতি সপ্তাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা, চক্ষুক্যাম্প, স্যানিটারি প্যাড বিতরণ এবং পুষ্টিতথ্য সম্পর্কিত সেবা দিয়ে থাকেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কৈশোরবান্ধব সুসজ্জিত কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। শুরু থেকে নড়াইলের ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এ কার্যক্রমের পরিধি আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, নড়াইলের তৎকালীন সিভিল সার্জন সাজেদা বেগম এখন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন। এখানেও (ফরিদপুর) ‘কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্ণার’-এর কার্যক্রম উদ্বোধনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। কর্মশালায় এমনটি জানিয়েছেন তিনি। #
Tags
নড়াইল