‘নোয়খালীকে বিভাগ চাই’ এই শিরোনামটি প্রায় দশক ধরে সোস্যালে হাসি-ঠাট্টা বা টিপ্পনি হিসেবে চাউর হলেও সেই অবস্থার বদল হয়েছে। কুমিল্লা বিভাগ হওয়ার গুঞ্জনে এখন রীতিমতো আদাজল খেয়ে রাস্তায় নেমেছে জেলাটির মানুষ। সোস্যালের সেই হাসি-ঠাট্টা এখন রীতিমতো সাংগঠনিক রূপ নিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নোয়খালীকে বিভাগ করার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সম্মিলিত নোয়াখালীবাসী। তাদের দাবি, কুমিল্লার সঙ্গে নয়, ঢাকা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বের স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা নোয়াখালীকেই বিভাগ হিসেবে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন চাই। প্রয়োজনে আমরা চট্রগ্রামের সঙ্গেই থাকবো, তবুও কুমিল্লার সঙ্গে বিভাগে যাবো না।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই দাবিতে কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এই দাবি নিয়ে একটি মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে নোয়াখালী প্রেসক্লাব ও টাইন হলের মোড় হয়ে জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শেষে আবারও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
এসময় নোয়াখালীর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, নোয়াখালী সরকারি কলেজ, চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ও মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীকে প্রশাসনিক বিভাগের দাবি জানান।
নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের হস্তক্ষেপ চান নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ ও সম্মিলিত নোয়াখালীবাসী।
মানববন্ধনে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, ধনে-মনে-জনে, ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পরিপূর্ণ ২০০ বছরের পুরনো জেলা আমাদের নোয়াখালী। ঐতিহ্যবাহী এই জেলাটি বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির শতকরা ৩৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে । এছাড়াও সাত লক্ষাধিক প্রবাসী অধ্যুষ্যিত এই জেলার প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনসহ জ্ঞানীগুনীর জেলা নোয়াখালীই নবম প্রশাসনিক বিভাগের যোগ্য দাবিদার। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে ঢাকা থেকে মাত্র ৮০ কিলোমিটার দূরত্বের কুমিল্লা নয়, ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বের স্বয়ংসম্পূর্ণ জেলা নোয়াখালীকেই বিভাগ হিসেবে ঘোষণা ও বাস্তবায়ন চাই।
তারা বলেন, নোয়াখালীর মানুষের অনুমতি ছাড়া কিংবা গণশুনাণি ছাড়া যদি কুমিল্লার সঙ্গে নোয়াখালীকে সংযুক্ত করে বিভাগ ঘোষণা করা হয় তাহলে নোয়াখালীবাসী মেনে নেবে না। প্রয়োজনে আমরা চট্রগ্রামের সঙ্গেই থাকবো, তবুও কুমিল্লার সঙ্গে বিভাগে যাবো না। আর বিভাগ বিষয়ে যদি নোয়াখালীকে নিয়ে কোনো চক্রান্ত করা হয় তাহলে নোয়াখালীর তরুণ প্রজম্ম প্রয়োজনে আদালতের শরণাপন্ন হবে। তবুও নোয়াখালীকে বিভাগের ঘোষণা না নিয়ে ঘরে ফিরবে না।