Daily News BD Online

টিসিবি কার্ড বিক্রি করেও বহাল তবিয়তে সবুজ হত্যাকান্ডের আসামী হামিদ সোহাগ


শেরপুর প্রতিনিধি :

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিকুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেলা জর্জ কোর্টের সাবেক পিপি  চন্দন কুমার পাল এর সহযোগী শ্রীবরদী উপজেলার ২ নং রানী শিমূল  ইউনিয়নের  চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আঃ হামিদ সোহাগ এর বিরুদ্ধে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড  বিক্রি করে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নেওয়া সহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিকুর রহমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পালের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় না না অন্যায় অপকর্ম করেও পার যেত। 

স্থানীয় প্রশাসন ছিলো অনেকটা অসহায় তার বিরুদ্ধে একাধিক বার অভিযোগ করে বিচার তো পাইনা বরং নানা বিরম্বনার স্বীকার হতে হয়েছে ভূক্তভূগিদের সে হুমকি ধামকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করতো সাধারন মানুষেকে তার ভয়ে টটস্থ থাকতো সাধারন মানুষ অবৈধ ক্ষমতা ব্যবহার করে বিচারের নামে মানবাধিকার লংঘন করে অত্যাচার নির্যাতন ও মারধর করতো সাধারন মানুষকে তার অত্যাচার থেকে রেহাই পেতো না শিক্ষক, আলেম উলামা মসজিদের ইমাম তাদেরকেও হেয় প্রতিপন্ন করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতো। ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শাহানা বেগম, কল্পনা নাছরিন, সাহিদা ও গ্রাম পুলিশ হুনুফাসহ পরিষদে বিভিন্ন কাগজ পত্র নিতে আসা স্কুল কলেজের ছাত্রী ও মহিলাদের কু প্রস্তাব দেয় ও শ্লীলতাহানি করে। বালীজুরী গ্রামের আছমা খাতুনকে খাস জমি বন্দোবস্ত করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় এছাড়াও ভায়াডাংগা মাছ বাজারের সরকারী জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলে একাধিক মানুষের কাছে ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।  

বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় ও জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনে অংশ গ্রহণ কারী বিএনপি জামাতের নেতা কর্মী ও ছাত্রদের বাড়ীতে বাড়ীতে পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি ধামকি ও মামলার ভয় দেখাতো এবং অনেককে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে মোটা অংকের টাকা বানিজ্য করতো তার অত্যাচার আর নির্যাতনের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকা ছাড়া ছিলো 

বিএনপি জামাতের বহু নেতা কর্মী। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতনের পর 

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল গ্রেফতার হলেও শহীদ সবুজ হত্যা মামলার আসামী চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এখনো সে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উপজেলা পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়  অংশ গ্রহণ করছে বিভিন্ন সভা সেমিনারে।

সরজমিনে অনুসন্ধানে যানা যায়  ,বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আঃ হামিদ সোহাগ 

নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগেই সরকারি ভাবে শ্রীবরদী উপজেলার ২ নং রানী শিমূল ইউনিয়নে ১৯৩২ টি টিসিবি বা ফ্যামেলি কার্ড বিতরণ করা হয়। কিন্তু বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ২০২১ সনে আঃ হামিদ সোহাগ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে টিসিবির পুরাতন কার্ড ইউনিয়ন পরিষদে  জমা দিয়ে নতুন কার্ড গ্রহন করার জন্য মাইকে প্রচারের মাধ্যমে নির্দেশ দেয় । পরবর্তীতে ১৯৩২ টি টিসিবি কার্ড জমা নিয়ে নতুন কার্ড দিতে না না টালবাহানা করতে থাকে এক পর্যায়ে চাপের মুখে ১৪ শয়ের মতো কার্ড ফেরত দিলেও আওয়ামী বিরোধী ও বিএনপি নেতা কর্মীর নামে থাকা প্রায় ৫ শতাধিক কার্ড অন্যদের কাছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জানান হামিদ সোহাগ চেয়ারম্যান হওয়ার পর আমার কার্ডটি জমা নেয় পরবর্তীতে কার্ডটি ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও আমার কার্ডটি আমাকে ফেরত না দিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করে দেয়। 

অনুসন্ধানে দেখা যায় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে ফ্যামিলি (টিসিবি) কার্ডের কোনো মিল নাই ।

২ নং রানী শিমূল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ হামিদ সোহাগ ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে একজনের টিসিবি কার্ড অন্য জনের নিকট টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার সময় মালাকুচা গ্রামের আলিমদ্দীর স্ত্রী 

মমেজা বেগম বলেন, আমি মেয়েমানুষ, লেখা পরা জানি না আমাকে দেওয়া হয়েছে রানী শিমূল গ্রামের মাহা আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগম নামের একটি কার্ড, আমি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান এর কাছে কার্ডটি কিনেছি। এটা যে অন্য জনের নামের কার্ড সেটা আমি জানতাম না। এই কার্ড দিয়ে পূর্বে টিসিবি পণ্য নিয়েছি। বিলভরট গ্রামের মৃত তারা মিয়ার স্ত্রী জমিলা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান এর ভাজতি জামাই বিলভরট গ্রামের শুটকুর ছেলে শরিফুলের কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। তাকে দেওয়া হয়েছে রানী শিমূল গ্রামের ইদ্রিস আলীর স্ত্রী ছাবিনা বেগম নামের একটি কার্ড, 

বিলভরট গ্রামের মুক্তার হোসেনের স্ত্রী 

ফরিদা বলেন, চেয়ারম্যান এর ভাজতি জামাই বিলভরট গ্রামের শুটকুর ছেলে শরিফুলের কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। তাকেও দেওয়া হয়েছে রানী শিমূল গ্রামের তাইবুদ্দীন সেখের স্ত্রী জরিনা বেগম নামের একটি কার্ড, মালাকুচা গ্রামের কুব্বাছ আলীর স্ত্রী জহুরা বলেন, আমি ও আমার ছেলে বউ আয়না খুকির নামে ২ টা কার্ড আমি চেয়ারম্যান এর ভাতিজা  চক্রপুর গ্রামের আঃ মাজিদের ছেলে মনিরুলের কাছে ২ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। আমাকে দেওয়া হয়েছে বিলভরট গ্রামের নবী উল্লাহর স্ত্রী মনিকা বেগম নামের একটি কার্ড, আর আমার ছেলের বউকে দিয়েছে রানী শিমূল গ্রামের কাজি মতিনের স্ত্রী রেজিয়া খাতুনের কার্ড মালাকুচা গ্রামের সয়মন বেগম বলেন আমার ছেলে শরিফুলের নামে চেয়ারম্যান একটা কার্ড দিয়ে দিয়েছে এখন দেখি এই কার্ডটি আমার নামে না এটা বিলভরট গ্রামের তারু মিয়ার ছেলে তরিকুলের নামের কার্ড চেয়ারম্যান আমার ছেলের সাথে পতারনা করেছে। রানী শিমুল  গ্রামের আঃ হাকিমের ছেলে হানিফ বলেন, চেয়ারম্যান সহযোগী রানী শিমূল  গ্রামের হাসেমের ছেলে ধলার কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। আমাকে দেওয়া হয়েছে ভায়াডাংগা বালুরচর গ্রামের বাদশা আলীর ছেলে ফজলুল করিম নামের একটি কার্ড, মালাকুচা গ্রামের  জুনাব আলীর স্ত্রী জুসনা বেগম বলেন হামিদ চেয়ারম্যান এর ভাতিজা  চক্রপুর গ্রামের আঃ মাজিদের ছেলে মনিরুলের কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। আমাকে দেওয়া হয়েছে 

ভায়াডাংগা পশ্চিম পারা গ্রামের 

হাসানুজ্জামান এর স্ত্রী জেসমিন আক্তার নামের একটি কার্ড, মালা কুচা গ্রামের জরিপ উদ্দীনের লিটন হাসানের মা বলেন হামিদ চেয়ারম্যান এর ভাতিজা  চক্রপুর গ্রামের আঃ রশিদের ছেলে জামিরুলের কাছে নিয়েছি। আমাকে দেওয়া হয়েছে টেংগরপারা গ্রামের ফরিজ উদ্দীনের ছেলে মাহাবুর রহমান নামের কার্ড, মালাকুচা গ্রামের আঃ রহমানের ছেলে মিষ্টারের স্ত্রী বলেন হামিদ 

চেয়ারম্যান এর ভাতিজা  চক্রপুর গ্রামের আঃ মাজিদের ছেলে মনিরুলের কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। আমার স্বামীকে 

ভায়াডাংগা গ্রামের আবু হায়াত এর ছেলে শাহিনুর রহমান শাহিনের নামের কার্ড দেওয়া হয়েছে। মালাকুচা গ্রামের মজ মিয়ার ছেলে   আঃ জলিলের স্ত্রী বলেন তার স্বামীকে দেওয়া হয়েছে রানী শিমুল  গ্রামের রহুল আমিনের ছেলে রবিউল ইসলাম নামের একটি কার্ড,

মালাকুচা গ্রামের আজাদ মিয়ার স্ত্রী পারুল বেগম বলেন পরিষদ থেকে তাকে 

 রানী শিমুল গ্রামের সাবেদ আলীর স্ত্রী ছফেনা বেগম নামের একটি কার্ড, 

মালাকুচা গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে আনছার আলী বলেন হামিদ চেয়ারম্যান এর আত্নীয় মাজহারুল ওরফে খাজার বউ কাছে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিয়েছি। আমাকে রানী শিমুল গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম নামের একটি কার্ড দিয়েছে। 

রানী শিমুল গ্রামের আজহার আলীর ছেলে লিটন মিয়া কিনে নিয়েছেন একাধিক কার্ড 

যার মধ্যে বাগহাতা গ্রামের মিজু মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, মালাকুচা গ্রামের জেহারুলের ছেলে জমর আলী, হাসধরা গ্রামের নুর উদ্দীন এর মেয়ে রিনা বেগম, হাসধরা গ্রামের রাজু আহমদের স্ত্রী রাশেদা খাতুন, চক্রপুর গ্রামের আফসার আলীর স্ত্রী আফরোজা খাতুন, বলেন আমি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান এর কাছে কার্ডটি কিনেছি। এটা যে অন্য জনের নামের কার্ড সেটা আমি জানতাম না। এই কার্ড দিয়ে পূর্বে টিসিবি পণ্য নিয়েছি। গত ৩০/১০/২০২৪ তারিখ চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগের বিভিন্ন অন্যায় অপকর্মের বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যগন স্থানীয় সরকার  আইন ৩৯ ধারায় অনাস্থা প্রস্তাব করেছেন। ইতি পৃর্বেও আব্দুল হামিদ সোহাগকে গ্রেফতার ও অপসারণের দাবীতে

প্রতিবাদ সমাবেশ স্বারক লিপি মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। সরকারের বিভিন্ন দফতরে একাধিক বার অভিযোগ ও প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও স্থানীয় প্রশাসন দৃশ্যত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনাই। ভূক্তভুগির ও এলাকার সচেতন মানুষ জানান এমন দুর্নীতিবাজ, স্বেচ্ছাচারি, অনিয়ম জাল স্বাক্ষরকারী, প্রতারক, নারী লোভি, চরিত্রহীন, সাধারণ মানুষের অর্থ আত্মসাতকারী, ডাকাত ও গুন্ডা প্রকৃতির লোক ও হত্যা মামলার আসামী আব্দুল হামিদ সোহাগকে দ্রুত গ্রেফতার ও অপসারণের দাবী জানান।

এবিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ বলেন,আমি সৎ ও নিষ্ঠার সহিত, ইউপি সদস্যদের  কঠোর ভাবে পর্যবেক্ষন করে কার্ড বিতরণ করতে বলেছি, কে বা কাহারা এই অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি কঠোর ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করিবো। 

ইউনিয়নের ১ ওয়ার্ড মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বলেন টিসিবি কার্ড বিতরণের দ্বায়িত্ব কোন মেম্বারকে দেওয়া হয় নাই বরং চেয়ারম্যান নিজে এবং তার ভাই ভাতিজার মিলে কার্ড প্রতি ১ হাজার টাকা করে নিয়ে বিতরণ করেছে। ৭ ওয়ার্ড মেম্বার মজিবর রহমান বলেন চেয়ারম্যান নিজে এবং তার ভাই ভাতিজার মিলে কার্ড প্রতি ১ হাজার টাকা করে নিয়ে বিতরণ করেছে আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে মার ধরে এবং মেরে ফলার হুমকি দেয় আমি থানায় সাধারণ ডায়রি করি যাহার নং ৯৮২।   

এবিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখ জাবের আহমেদ বলেন আমি অনাস্থা প্রস্তাব পেয়েছি এবং টিসিবির কথা শুনলাম তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন