ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :
একদিকে নতুন ধানের ম-ম গন্ধ, অন্যদিকে শাপলা ফুলের অপার সৌন্দর্য। এ যেনো এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের মতো অবস্থা। ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী ইউনিয়নের অলহরী গ্রামের ধান ক্ষেতে জমে থাকা পানিতে ধান গাছের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি মেরে সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে লাল শাপলা ফুল। ফুলের সৌন্দর্য কেড়েছে কোমলমতি শিশুদের মন। প্রতিদিন আশেপাশের শিশুরা ফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছে তাদের বাড়িতে। ফুল দেখতে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার অলহরী গ্রামের রাশেদ আহমেদ রিয়াদ তার জমিতে ধান চাষ করেছেন। পুরো জমিতে ধানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে জন্মেছে লাল শাপলা ফুলের অসংখ্য গাছ। এ যেনো ফুলের রক্তিম আভার হাতছানি।
স্থানীয় কৃষক আবুল মনসুর জানান, আমি বিগত কয়েকদিন ধরেই এখানে ধান কাটছি। ধান ক্ষেতে এতো বেশি ফুল ফুটতে আমি আগে কখনো দেখিনি। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে কাক ডাকা ভোর থেকেই শিশুরা আসছে। সাথে তাদের অভিভাবকরাও থাকছে। শিশুরা ফুল তুলে অনেক আনন্দের সাথে তা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। নিজ হাতে ফুল তুলতে পেরে তারা ভীষণ খুশি। তবে এভাবে নিয়মিত ফুল তুলে নিলে দীর্ঘ সময় সৌন্দর্য উপভোগে বঞ্চিত হবে মানুষ।
ফুল তুলতে আসা স্থানীয় জয়দা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোমা আফরিণ বলে, ধান ক্ষেতে অনেক শাপলা ফুল ফুটেছে। আমার ছোট ভাইকে নিয়ে ফুল দেখতে আসছি। আমার ছোট ভাই আমাকে কয়েকটি ফুল তুলে দিল। ফুল আমার সবসময় পছন্দ, দেখে অনেক ভালো লাগছে।
স্থানীয় তোফাজ্জল হোসেন বাদল বলেন, বর্তমানে শিশুরা নির্মল আনন্দ বিনোদনের সুযোগ কম পায়। আমাদের সময় বিল-ঝিল, পুকুরে অসংখ্য শাপলা ফুল ফুটে থাকতো। এখন তেমন দেখা যায় না। এখানের ধান ক্ষেতে লাল শাপলা ফুল সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এটা দেখে আশেপাশের শিশু ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ছোট ছোট কোমলমতি শিশরা ফুল তুলতে নিজেরাই নেমে পড়ছে ধান ক্ষেতের কাদামাখা পানিতে। পুকুর বা অন্যকোন জলাশয় হলে যেটা সম্ভব ছিল না। পাশে দাড়িয়ে থেকে দাদা হিসেবে আমিও নাতি-নাতনীদের সেই সুযোগ করে দিয়েছি।
ধান ক্ষেতের মালিক রাশেদ আহমেদ রিয়াদের মা হাসনা হেনা বলেন, আমার ধানের ক্ষেতে শাপলা ফুল ফুটেছে। ফুল গুলো দেখতে ভালো লাগলেও শিশু-কিশোররা ফুল তুলতে গিয়ে জমির ধান নষ্ট করে ফেলছে। তবে তাদের বাঁধা দিতেও মন চায় না, তাই সবসময় খেয়াল রাখতে হয়।