এ.বি.এম.হাবিব-
নওগাঁর নিয়ামতপুরে সিদ্দিক চৌধুরী গং ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আদিবাসী পাড়ার ২৭টি পরিবারদের কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বন্দী অবস্থায় রেখেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ৮নং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের খড়িবাড়ী শ্যামপুর আদিবাসী পাড়ার মোট ২৭টি পরিবারকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কাটাতারের বেড়া দিয়ে ৫দিন ধরে বন্দী করে রেখেছে পার্শবর্তী ভুমিদষ্যু দখলবাজ সিদ্দিক চৌধুরী গংরা।
গত (২৮ জানুয়ারি) বুধবার খবর পেয়ে নওগাঁ থেকে সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পান। আদিবাসীরা ও পার্শবর্তী গ্রামবাসীরা জানায়, বিগত প্রায় ৫০/৬০ বছর ধরে এই আদিবাসী জনগোষ্ঠী সেখানে বসবাস করে আসছে। সে সময় জায়গাটি নিচু ছিল,আদিবাসীরা সেই নিচু জায়গাটি তারা মহিলা পুরুষ সকলে মিলে খেটে মাটি দ্বারা ভরাট করে বসতবাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করে। সেই থেকে কোন প্রকার সমস্যা ছিল না। গত ২০২০ সালে সেই জায়গা গুলোর উপর কু-নজর পড়ে এই চৌধুরী বংশের। সে সময় একবার আদিবাসীদের মারপিট করে, সেখান থেকে উৎখাত করার চেষ্টা করেছিল এই চৌধুরী গংরা। কিন্তু সেসময় স্থানীয় চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ এর নিকট আদিবাসিরা লিখিত দরখাস্ত দিলে,চেয়ারম্যান চৌধুরী গংদের নোটিশ করে, তাদের বৈধ কাগজপত্র দেখতে চাইলে সিদ্দিক চৌধুরী গং কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায়,চৌধুরী গংদের নিষেধ করেন সেখানে যেতে এবং আদিবাসিদের একটি লিখিত প্রত্যায়নও দেন। এরপর পরিবেশ ভালো ছিল। আবারও গত (২৫জানুয়ারী) ২০২৫ ইং তারিখ শনিবারে দলবল নিয়ে, দেশীও ও ধারালো অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে আদিবাসীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে পুরো পাড়ায় তাদের বসতবাড়ী ঘেঁষে তারকাঁটার বেড়া দিয়ে তাদেরকে বন্দী অবস্থায় রেখে দেয় চৌধুরী গং রা। আদিবাসীরা কাজ না করলে তাদের খাদ্য জোগানো কঠিন তাই লুকিয়ে বিভিন্ন ভাবে তারা বের হওয়া চেষ্টা করে। কিন্তু এতেও তাদেরকে বাঁধা দিয়ে খুন,জখমের হুমকি,ধামকি দিয়েই চলছে সিদ্দিক গংরা। এতে আদিবাসী ২৭টি পরিবার খুব দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। আদিবাসীরা এই বন্দী অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানান।
এ বিষয়ে সিদ্দিক চৌধুরীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে, তারা সাংবাদিকদের সাথে দেখা করবে না বা কোন কথা বলবে না, বলে মোবাইল ফোনে জানায়।
বিষয়টি নিয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে দেখা করে, আদিবাসীদের বন্দী অবস্থার ভিডিও উপস্থাপন করলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তা সাখাওয়াত সাহেবকে ফোন করে বেড়া সরানোর ব্যাবস্থা করতে বলেন। সাখাওয়াত সাহেব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিদ্দিক চৌধুরী গংদের বেড়া সড়ানোর কথা বললে,সিদ্দিক গং এর পৈতৃক সুত্রের জমি বলে দাবী করে। কিন্ত এতোদিন তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারলো না, হটাৎ করে পৈতৃক সুত্রে জমি কিভাবে হলো স্থানীয়দের দাবী এবং সম্পত্তিটির খতিয়ানে ৪ দাগে সুস্পষ্ট উল্লেখ্য আছে ওই জমি সহ আশেপাশের আরো বহু জমি ১নম্বর খাস খতিয়ান ভুক্ত বাংলাদেশ সরকারের সম্পত্তি। এগুলো নিয়েই বর্তমানে মাপ-যোগ চলতেছে কিন্তু আদিবাসীদের বন্দী অবস্থার এখনো কোন সুরাহা হয় নাই। (চলবে)
Tags
নওগাঁ