Daily News BD Online

এক যুগ ধরে পরিত্যক্ত পড়ে আছে ১ কোটি টাকার স্লুইস গেট



খাঁন মোঃ আঃ মজিদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি 

দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় চিরিনদী খালের ওপর নির্মিত স্লুইস গেটটি দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে কৃষকের কাজে আসছে না। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকায় চুরি হয়ে গেছে স্লুইস গেটটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। স্লুইস গেটটি অকেজো হওয়ায় নদী পারাপারে কৃষকরা কৃষি পণ্য আনা নেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় কেৃষককে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, চিরিনদীতে কৃষকের সেচ সুবিধার জন্য শুষ্ক মৌসুমের পানি আটকে আলু, ভুট্টা, রসুন, সরিষা ও বোর ধান ক্ষেতে কম খরচে পানি দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি স্লুইস গেট ছিল। সেটি দিয়ে কৃষকরা উপকৃতও হতো। কিন্তু প্রায় ১২ বছর হলো স্লুইস গেটটি পরিত্যক্ত হয়ে বন্যার পানিতে ভেঙে পড়ে। এ সময় কৃষকের ভোগান্তি দূর করতে এলজিডি একটি অপরিকল্পিত স্লুইস গেট নির্মাণকাজ শুরু করে সেখানে। স্লুইস গেটটির নির্মাণকাজ শেষে হয়েছে শুধু সংযোগ সড়কের জন্য দুই পাশে মাটি দিয়ে ভরাট করে দেওয়া হয়েছে। এমন সময় বর্ষাকালে নদীর পানি বেশি হলে একপাশে মাটি সরে পানি চলে যায় কারণ নদীর মাঝ খানে ছোট করে স্লুইস গেটটি অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করায় শুষ্ক মৌসুমে পানি আসে না। 

চিরিরবন্দর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন আগে তৈরি হওয়ায় এটির কাগজ পত্র পাওয়া যাচ্ছে না। এটি কোন অর্থ বছরে কত টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না বলে জানায় এলজিইডি।

স্থানীয় কৃষক নকুল চন্দ্র রায় ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি প্রকল্পে স্লুইস গেট তৈরি করা হয়েছিল যাতে কৃষক ক্ষেতে পানি দিতে পারে। কিন্তু এটি নদীর মাঝেখানে ছোট করে তৈরি করায় স্লুইস গেটটি কাজে আসে না। দীর্ঘ ১০ থেকে ১২ বছর ধরে পড়ে আছে। অনেক জিনিস চুরি হয়েছে। এদিকে নদীর ওপার থেকে কোনো পণ্য নিয়ে নদী পাড় হতে পারি না সংযোগ সড়ক না থাকায়। 

কৃষক অতুল চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এটি কর্তৃপক্ষের নজরের বাইরে। স্লুইস গেটটি অপরিকল্পিতভাবে ছোট করে তৈরি করেছে তাই শুরু থেকেই এটি কৃষকের কোনো কাজে আসে না। আমার চাই এটি সঠিক পরিকল্পনা করে আবার মেরামত করা হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদার রহামান বলেন, উপজেলার পূর্ব সাইতাঁড়া গ্রামে চিরিনদীতে দীর্ঘদিন আগে স্লুইস গেটটি তৈরি করা হয়েছে। স্লুইস গেটটি ছোট করে নির্মাণ করা হয়েছে। আর নদীটি বড় হওয়ার কারণে সেখানে বর্ষার সময় পানি আটকে থাকে না। তাই নদীর পাড় ভেঙে পানি চলে আসে। সেখানে একটি সেচ কমিটি আছে। তারা যদি আমাদের কাছে বিষয়টি সঠিকভাবে আবেদন করে তাহলে আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করব।

স্লুইস গেটটি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা চিরিরবন্দর উপজেলা সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম বলেন, আমার সঠিক মনে নেই কত সালে এটি তৈরি করা হয়েছে। স্লুইস গেটটি সম্ভবত ১০ সালের দিকে ১ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল। পরর্বতী সময়ে সেটি আর ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। এখন এতদিন পর এটি নিয়ে লেখালেখি করে কি করবেন। স্লুইস গেটটি এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন