Daily News BD Online

দিনাজপুরে নিজ বাড়ির উঠানে বসে থাকা এক কিশোরী গুলিবিদ্ধ হয়েছে



দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলায় আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী পশ্চিম শিবরামপুর কোম্পানি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পুলিশের বার্ষিক প্রশিক্ষণ (ফায়ারিং স্কোয়াড) চলাকালে একটি গুলি শাহনাজ পারভীন (১৫) নামের ওই কিশোরীর পায়ে এসে লাগে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

শিবরামপুর এলাকার জালাল উদ্দিনের মেয়ে শাহনাজ পারভীন দিনাজপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সে বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করছে।

এই ঘটনায় পুলিশ সুপারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

গত ১২ জানুয়ারি থেকে দিনাজপুর আনসার ও ভিডিপি ফায়ারিং স্কোয়াডে পুলিশ সদস্যদের বার্ষিক ফায়ারিং রিহার্সাল (প্রশিক্ষণ) চলছে। এটি চলবে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আহত শাহনাজ পারভীন এ প্রতিবেদককে বলে, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির উঠানে চেয়ারে বসে রোদ পোহাচ্ছিলাম। হঠাৎ ডান পায়ের হাঁটুর ওপরে কী জানি এসে লাগলে আমি চেয়ার থেকে পড়ে যাই। ব্যথায় চিৎকার করে উঠি। পরে পায়জামা তুলে দেখি রক্ত বের হচ্ছে। পায়জামার টানে গুলিটা মাটিতে পড়ে যায়। ওই সময় ধরধরায় (তীব্র ধারায়) রক্ত বের হতে থাকে। জায়গাটা অনেক খাল (গর্ত) হয়ে গেছে।’

শাহনাজ পারভীনের বাবা জালালউদ্দিন বলেন, ‘মেয়েকে নিয়ে আনসার ভিডিপিতে যাই। সেখানে অফিসারদের গুলিটা দেখাই এবং সেখান থেকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। পরে পুলিশ ও আনসারের বড় অফিসারেরা আমার বাসায় আসেন। তারা গুলিটার ছবি তুলে নেন। পরে পুলিশের বড় স্যার হাসপাতালে যান।’

শাহনাজ পারভীনের বাবা বলেন, ‘আজকে না হয় আমার মেয়ের পায়ে লাগছে, আরেক দিন তো কারও গায়ে বা পেটেও লাগতে পারে! ওরা বলতেছে মাইকিং করছে, কিন্তু কই, আমরা তো কোনো মাইকিং শুনি নাই।’

শাহনাজের মা সাবেকুন নেহার জানান, ‘মেয়ের আমার পুলিশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ছিল। এখন তো আর লাইনে দাঁড়াইতেও পারবে না। ওর সামনে পরীক্ষা, প্রতিদিন সকালে কোচিং। এখন সুস্থ হইতে কয় দিন লাগবে কে জানে!’

এ বিষয়ে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার রাকিবল ইসলাম বলেন, ‘কিশোরীর পায়ে এক সেন্টিমিটারের মতো গর্ত দেখতে পাই। ওখানে গুলি ছিল না। তবে রোগীর কথা অনুযায়ী ও-রকম একটা কিছুর আঘাত হতে পারে। পরে আমরা চিকিৎসা দিয়ে ব্যান্ডেজ করে রোগীকে ছেড়ে দেই।’

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ‘দিনাজপুর পুলিশের নিজস্ব কোনো ফায়ারিং স্কোয়াড নেই। ফলে পুলিশের বার্ষিক ফায়ারিং রিহার্সাল করতে হয় আনসার ভিডিপির ফায়ারিং স্কোয়াডে। এটি (গুলি লাগা) একটি দুর্ঘটনা। আমরা গুলিটি জব্দ করেছি। তবে এত দূর গুলিটা যাওয়ার কথা নয়। গুলি লাগার অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।’

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন