নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক :
জানুয়ারির শুরুতেই পৌষের শীতে জবুথবু নারায়ণগঞ্জ । জেঁকে বসেছে শীতের তীব্রতা। কুয়াশায় ছেয়ে গেছে চারদিক, মেঘাচ্ছান্ন হয়েছে আকাশ। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে এলেও সূর্যের আর দেখা মিলেনি। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি জেলার শহরাঞ্চল ঘন কুয়াশার চাঁদরে ঢেকে গেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুক্রবার সকালে নগরীতে ঘন কুয়াশা দেখা যায়। ভোরের দিকে বহু এলাকায় হেডলাইট জ্বালিয়ে সড়কে যানবাহনের চলাচল দেখা গেছে। এর আগে, বুধবার রাতের দিক থেকেই আবহাওয়া অনেক ঠান্ডা হয়ে আসতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। সকাল গড়িয়ে বিকেল নেমে এলে ঠান্ডা বাতাসও বইতে শুরু করে। শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ এর বন্দর, আড়াইহাজার, রুপগঞ্জ, সোনারগাঁও, মদনপুর, চিটাগংরোড, সাইনবোর্ড, ভুঁইগড়, জালকুড়ি, শিবু মার্কেট, চাষাড়া ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে ।
সিহাব নামে এক মিশুকচালক বলেন, আজকে অনেক কুয়াশা পড়েছে। কুয়াশার কারণে দশ হাত দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছে না। ভোর সকালের দিকে গাড়ী নিয়ে চলতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে। রাস্তায় চলার সময়ে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। এর উপর প্রচুর ঠান্ডা লাগছে যা জ্যাকেট, মাফলার, হাত মোজা পড়েও মানছে না। আল নাহিয়ান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আজ শহরে শীতের তীব্রতা অনেক। আমার ভীষণ ঠান্ডা লাগছে। সকাল থেকে বিকেল গড়িয়ে আসছে, তবে আজ আকাশে সূর্যের দেখা পাইনি। এমন শীত অনেক কম দেখা যায় নারায়ণগঞ্জে। বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকলেও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এই সময় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৬-১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। আর আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এর আগে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে ঘন কুয়াশার কারণে সারা দেশের কোথাও কোথাও দিবাভাগে (দিনের বেলায়) শীতের অনুভূতি বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে। এই একই কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে ব্যাহত হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে।
এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতি বাড়বে। এদিকে হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তীব্র শীতে মিলছে না কাজ। দিনমজুর-নিম্ন আয়ের মানুষের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। তাদের এই তিক্ত অবসর কাটছে আগুন জ্বালিয়ে। এই তাপই যেন শীতে তাদের একমাত্র ভরসা।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি কোথাও কোথাও ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত কমে গেছে। বিশেষ করে রংপুর ও ঢাকা বিভাগে তাপমাত্রা অনেক কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়, ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় ১৩ দশমিক ৮, যা বুধবার ছিল ১৫; রাজশাহীতে ছিল ১২, ২ ডিগ্রি কমে ১০ দশমিক ৫; রংপুরে বুধবারেও ১২ দশমিক ৫, বৃহস্পতিবারও তাই ছিল; ময়মনসিংহে বৃহস্পতিবার দুই ডিগ্রি কমে ১৩ দশমিক ৫, ছিল ১৫; সিলেটেও ছিল ১৬ দশমিক ২, বৃহস্পতিবারও ১৬ দশমিক ২, চট্টগ্রামে বৃহস্পতিবার ১৬ দশমিক ৫, ছিল ১৫ দশমিক ৭; খুলনায় বৃহস্পতিবার দুই ডিগ্রি কমে ১২ দশমিক ৩, যা বুধবার ছিল ১৪ দশমিক ৫; বরিশালে ছিল ১৪ দশমিক ৩, বৃহস্পতিবার প্রায় একই ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।