বসন্তে লাল আভায় সেজেছে সুনামগঞ্জের শিমুল বাগান



পর্যটনের জন্য বিখ্যাত হাওর জেলা সুনামগঞ্জের প্রকৃতিতে চলছে শিমুল ফুলের আধিপত্য। শীতের শেষে ফাগুনের শুরুতেই জেলার তাহিরপুরের শিমুল বাগানের ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়েছে রক্তিম আভায়। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ছুটে যাচ্ছেন হাজারো দর্শনার্থী। পাশাপাশি এই বাগানকে ঘিরে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ হওয়ায় চাঙা হয়ে উঠেছে প্রান্তিক পর্যায়ের অর্থনীতি।

হাওরাঞ্চলে শীতের রুক্ষতাকে বিদায় করে প্রকৃতি সেজেছে নব সাজে। ঝরাপাতার দিনশেষে শহর থেকে গ্রাম গাছে গাছে নতুন শাখা-কুঁড়ি। মুকুল-শিমুল-পলাশে মিতালী করে বসন্ত এরই মধ্যে মেলে ধরেছে তার নিজস্ব রূপ। ফাগুনের আগুনে মন রাঙিয়ে সেজেছে উত্তর জনপদের সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত শিমুল বাগান।

জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত এলাকা তাহিরপুরে ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে তোলা হয়েছে এ বাগান। রূপের নদী যাদুকাটা নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রামে ১০০ বিঘারও বেশি জায়গাব্যাপী এ শিমুল বাগান এশিয়ার সর্ববৃহৎ। বাগানে ঢুকলেই চোখে পরে গাছে গাছে হাজারো রক্তিম শিমুল ফুল। সেই ফুল সংগ্রহে বালক-বালিকারা দলবেঁধে ছুটছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

এ বছর বাগানের তিন হাজার শিমুল গাছের মধ্যে দুই হাজার ৭০০ শিমুল গাছে ফুল ফুটেছে। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন বাগানে ছুটে আসছেন প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থী। বেড়েছে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততা। ঝরে পড়া শিমুল ফুল কুড়িয়ে ভালোবাসার প্রতীক তৈরি করে অর্থ উপার্জন করছেন স্থানীয়রা।

বাগানে ঘুরতে আসা মনোরঞ্জন দাস বলেন, পরিবার নিয়ে শিমুল বাগানে ঘুরতে এসেছি। সৌন্দর্য দেখে আমরা মুগ্ধ। উর্মি চৌধুরী নামের এক পর্যটক বলেন, বাগানে এসে শিমুল ফুলের প্রেমে পড়েছি। সত্যি অসাধারণ জায়গা এই শিমুল বাগান। রোদেলা আক্তার বলেন, এই প্রথম শিমুল বাগানে এলাম। একসঙ্গে এত শিমুল ফুল দেখে আমি মুগ্ধ। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হলে এই বাগানে আরও পর্যটক আসতো। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ফাগুনে সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাতে কোনো দর্শনার্থীকে হয়রানিতে না পড়তে হয় সেজন্য পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।


২০০২ সালে মানিগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন নিজের প্রায় দুই হাজার ৪০০ শতক জমিতে প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। দিনে দিনে বেড়ে ওঠা শিমুল গাছগুলো এখন দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় পর্যটন স্পট হয়ে উঠেছে। যেখান থেকে চলতি বছর প্রায় কোটি টাকার উপরে বাণিজ্য হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন